আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ধৃতকে। — নিজস্ব চিত্র।
সিবিআই আধিকারিক পরিচয় দিয়ে দফায় দফায় এক শিক্ষকের কাছ থেকে ৩৩ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল এক যুবককে। শুভজিৎ বারুই নামের ওই যুবককে পুলিশ বুধবার খাতড়া মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। আদালত অভিযুক্তকে ৫ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। ধৃত অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর ডিসেম্বর মাসে বাঁকুড়ার খাতড়া থানায় শুভজিতের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন কবিতা মণ্ডল নামে এক মহিলা। কবিতার দাবি, নিজেকে সিবিআই আধিকারিক হিসাবে পরিচয় দিয়ে শুভজিৎ তাঁর স্বামী দিলীপকুমার মণ্ডলের থেকে দফায় দফায় মোট ৩৩ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করে খাতড়া থানার পুলিশ। তদন্তকারীরা জানতে পারেন অন্য একটি মামলায় অভিযুক্ত হয়ে দমদম সংশোধনাগারে রয়েছেন শুভজিৎ। এর পর আদালতে আবেদন জানিয়ে আবার তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
কবিতা বলেন, ‘‘পরিচয় করার সময় শুভজিৎ নিজেকে সিবিআই আধিকারিক হিসাবে দাবি করেছিলেন। পরবর্তী কালে ওঁর সঙ্গে আমাদের পরিবারের ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। আমার দেবর এবং দেবরের স্ত্রীর সঙ্গে আমাদের ঝগড়া হয়েছিল। সেটা জানতেন শুভজিৎ। ২০২২ সালের অগস্ট মাসে শুভজিৎ আমাদের জানান, সোনারপুর থানায় আমার দেবরের স্ত্রী আমার স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন। তার ভিত্তিতে আমার স্বামী যে কোনও সময় গ্রেফতার হতে পারেন বলেও ভয় দেখান শুভজিৎ। তিনি আরও জানান, কিছু টাকা খরচ করলে তিনি আমার স্বামীর গ্রেফতার আটকে দিতে পারবেন। ওঁর কথায় বিশ্বাস করে আমরা ১১ লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। পরবর্তী কালে জানতে পারি, আমার দেবরের স্ত্রী কোনও অভিযোগই জানায়নি।’’
কবিতা আরও বলেন, ‘‘শুভজিৎ আমার ছেলেকে রেলে গ্রুপ সি পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামেও ১৯ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন। একটি ভুয়ো নিয়োগপত্রও দিয়েছিলেন। সেই নিয়োগপত্র নিয়ে বিহারের একটি রেল স্টেশনে কাজে যোগ দিতে গিয়ে আমার ছেলে সত্য ঘটনা জানতে পারে। এর পর আমরা থানার দ্বারস্থ হই। শুভজিৎ বিভিন্ন অজুহাতে আমাদের কাছ থেকে মোট ৩৩ লক্ষ টাকা নিয়েছেন।’’
অভিযুক্ত শুভজিৎ বলেন, ‘‘আমি কখনই নিজেকে সিবিআই আধিকারিক হিসাবে পরিচয় দিইনি। টাকা আত্মসাতের অভিযোগও মিথ্যা।’’
খাতড়ার এসডিপিও কাশীনাথ মিস্ত্রি বলেন, ‘‘আমরা হেফাজতে নিয়ে অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এ বিষয়ে আরও বিশদে জানার চেষ্টা করব। প্রাথমিক ভাবে মনে হয়েছে, ধৃতের সঙ্গে সিবিআইয়ের কোনও সম্পর্ক নেই। ওই যুবক এই ধরনের আর কোনও প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত কিনা বা এই প্রতারণায় আরও কেউ যুক্ত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’