লাভপুর থেকে বোলপুর, শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
দুঃসময়ে রক্ত না পেয়ে বিপাকে পড়েছিল একটি পরিবার। খবর পেয়ে পাড়ুই থেকে বোলপুরে ছুটে এলেন হাসনাত আহমেদ নামে এক কলেজ পড়ুয়া। সময় মতো রক্ত পেয়ে অভিভূত থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত আট বছরের কৃষ্ণ বাগদির পরিবার।
লাভপুর থানার ঠিবা গ্রামের বাসিন্দা সুমন্ত বাগদি তাঁর ৮ বছরের থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত ছেলে কৃষ্ণকে নিয়ে শুক্রবার বি-পজ়িটিভ রক্তের জন্য বোলপুর ব্লাড ব্যাঙ্কে আসেন। কিন্তু এক দিকে লকডাউন, অন্য দিকে করোনা পরিস্থিতির কারণে জেলায় এ বার সে ভাবে রক্তদান শিবির না হওয়ার জন্য ওই গ্রুপের রক্ত পাওয়া যায়নি ব্লাড ব্যাঙ্কে। খুবই চিন্তায় পড়ে যায় ওই পরিবার। সুমন্ত বীরভূম ভলান্টিয়ার ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাদের মারফত সে খবর পৌঁছায় পাড়ুইয়ের বাসিন্দা, বোলপুর কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র হাসনাতের কাছে। সঙ্গে সঙ্গে বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়েন তিনি। রাস্তায় যাতে কোনও সমস্যার মধ্যে পড়তে না হয়, তার জন্য ‘ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত দিতে যাচ্ছি’ সাদা কাগজে লিখে তা বাইকের সামনে সাঁটিয়ে দিয়েছিলেন।
এ ভাবেই বছর একুশের হাসনাত বোলপুর হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে পৌঁছে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত ওই বালককে রক্ত দেন। করোনা পরিস্থিতিতে যেখানে অনেকেই হাসপাতালমুখো হতে ভয় পাচ্ছেন, সেখানে হাসনাতের এ বাবে ছুটে আসাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন অনেকেই। সুমন্ত বলেন, ‘‘ছেলেকে নিয়ে স্বাভাবিক সময়েই রক্ত জোগাড় করতে সমস্যা হয়, এখন তো লকডাউন। এ দিন হাসপাতালে ওই গ্রুপের রক্ত না মেলায় খুবই অসহায় লাগছিল। ওই সংস্থা এবং হাসনাত আমার পরিবারকে চিন্তামুক্ত করায় আমি ওদের কাছে কৃতজ্ঞ।’’
ওই কলেজ পড়ুয়ার প্রশংসা শোনা গিয়েছে ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীদেরও মুখেও।
হাসনাত নিজে বলছেন, ‘‘থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত ছেলেটির রক্ত কোথাও পাওয়া যাচ্ছিল না। আমারও ওই একই গ্রুপের রক্ত। তা ছাড়া, আমি নিয়মিত রক্তদাতা। রক্তদানের মাধ্যমে ওর প্রাণ বাঁচাতে পেরে আমি ধন্য।’’