— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
পুরনো জিনিসপত্র কেনাবেচার ওয়েবসাইট ব্যবহার করে একের পর এক প্রতারণা করেছেন। এমনই অভিযোগে মোট সাত জনকে গ্রেফতার করল বাঁকুড়া পুলিশ। বাঁকুড়ার ছাতনা থানার ঝাঁটিপাহাড়ি এলাকায় এক জনের কাছে গাড়ি কেনার নাম করে প্রতারণা করা হয়। ধৃতদের কাছ থেকে গাড়িটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
এটিএম কার্ডের নম্বর ব্যবহার করে প্রতারণার ঘটনা আকছার ঘটে। কিন্তু কেনাবেচার ওয়েবসাইট ব্যবহার করে প্রতারণার এই ঘটনা ‘অন্য রকম’ বলে দাবি পুলিশের। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি পুরনো, দামি গাড়ি বিক্রির জন্য পরিচিত একটি ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেন বাঁকুড়ার ছাতনার ঝাঁটিপাহাড়ির বাসিন্দা বিশ্বজিৎ রক্ষিত। বিজ্ঞাপন দেখে কলকাতার বাসিন্দা পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি ওই গাড়িটি কেনার আগ্রহ দেখান। বিশ্বজিতের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন ওই ব্যক্তি। গাড়ি বিক্রির দর স্থির হয় ৯ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। এর মধ্যে এক যুবক ঝাঁটিপাহাড়িতে গিয়ে ওই অঙ্কের ‘ডিমান্ড ড্রাফ্ট’ দিয়ে গাড়ি নিয়ে যান। কিন্তু দিন দুই পরে ‘ডিমান্ড ড্রাফ্ট’ ব্যাঙ্কে জমা করতে গিয়ে বিশ্বজিৎ বুঝতে পারেন, সেটি ভুয়ো। প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে ছাতনা থানার পুলিশের কাছে যান ওই ব্যক্তি।
ঘটনার তদন্তের জন্য একটি দল গঠন করে পুলিশ। বিভিন্ন তথ্য, সূত্র এবং প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে গত ১২ জানুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া এলাকা থেকে সালিম শেখ নামে এক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর কাছ থেকে গাড়িটিও উদ্ধার করা হয়। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গত ১৫ জানুয়ারি তাঁর দুই সহযোগীকে ধরা হয় উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর থেকে। ধৃতদের নাম সমীর মণ্ডল এবং গৌরীশঙ্কর বক্সি। তাঁদের কাছে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকা থেকে জালিয়াতি চক্রের ‘মূল চক্রী’ নিতাই মাইতি-সহ আরও চার জনকে ধরে পুলিশ। এঁরা প্রত্যেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সরশুনার বাসিন্দা।
ধৃতদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত মোট ৮টি মোবাইল এবং বেশ কিছু ভুয়ো নথি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। বুধবার ধৃতদের হাজির করানো হয় বাঁকুড়া জেলা আদালতে। বাঁকুড়ার জেলা পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, ‘‘জনপ্রিয় ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপন দেখে ওই প্রতারকেরা বিভিন্ন বিক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করত। পরে ভুয়ো ডিমান্ড ড্রাফ্ট বা চেক দিয়ে জিনিস কিনে গা-ঢাকা দিত। প্রতারণার পর এরা কোনও সূত্রই রাখত না। মোবাইল ফোন-সহ যা কিছু প্রতারণার কাজে লাগানো হত, সব নষ্ট করে ফেলত। কিন্তু তার পরেও আমরা বিশেষ কিছু সূত্র কাজে লাগিয়ে এই চক্রের সকলকে ধরতে পেরেছি। গাড়িটিও উদ্ধার করেছি।’’