মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে কুম্ভমেলায় পদপিষ্টের ঘটনার পর আহতদের উদ্ধার করছে পুলিশ। —ফাইল চিত্র।
কুম্ভমেলায় পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ার এক যুবকের। মৃতের নাম বিনোদ রুইদাস (৪২)। তাঁর বাড়ি জামুড়িয়া থানার কেন্দা বাউড়ি পাড়া এলাকায়। কুম্ভস্নানে গিয়ে নিখোঁজ মালদহের প্রৌঢ়া অনিতা ঘোষও। গত মঙ্গলবার ভোরে ব্যারিকেড ভেঙে যাওয়ার ঘটনার পর থেকেই খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না তাঁর। ইংরেজবাজারের বাড়িতে পরিবারের মধ্যে এখন উৎকণ্ঠার ছাপ।
আত্মীয় এবং আরও কয়েক জনের সঙ্গে কুম্ভে গিয়েছিলেন বিনোদ। বাড়িতে তাঁর দুই মেয়ে এক এক ছেলে রয়েছে। পরিবার সূত্রে খবর, কুম্ভমেলায় পদপিষ্টের ঘটনাস্থলে বিনোদের মোবাইল পড়ে ছিল। সেটি কুড়িয়ে পান রাজস্থানের এক বাসিন্দা। তিনিই পরিবারের লোকেদের ফোন করে জানান, পদপিষ্টের ঘটনাস্থলে মোবাইলটি পড়ে ছিল। পুলিশের কাছে খোঁজখবর নেওয়ার পরামর্শ দেন। সেখান থেকেই প্রয়াগরাজে থাকা মৃতের আত্মীয় এবং অন্যেরা খবর পান। পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁরা জানতে পারেন, বিনোদের মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা এখন বিনোদের দেহ নিয়ে ফিরছেন আসানসোলে। আসানসোলের মহকুমাশাসক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য জানান, গাড়িতে করে দেহ নিয়ে আসা হচ্ছে। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সেন্ট্রাল) ধ্রুব দাস জানান, শুক্রবার ভোরেই তাঁর দেহ পৌঁছে যাবে জামুড়িয়ায়।
বিনোদের মতো আত্মীয়দের সঙ্গে কুম্ভে গিয়েছিলেন মালদহের অনিতাও। তাঁর সঙ্গে আরও চারটি পরিবার ছিলেন। মঙ্গলবার ভোরের দিকে সঙ্গমে পুন্যস্নানের জন্য যাচ্ছিলেন তাঁরা। সেই সময়েই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটে। তার পর থেকে প্রৌঢ়ার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না কেউই। পদপিষ্টের ঘটনার সময়ে সকলেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন। প্রাথমিক ধাক্কা সামলানোর ঘণ্টা খানেক পরে বাকিদের খোঁজ মিললেও, প্রৌঢ়াকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। হাসপাতালে হাসপাতালে খোঁজ চলছে। কাছাকাছি থাকা আশ্রমগুলিতেও খোঁজ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোথাও কোনও সদুত্তর মেলেনি। ইংরেজ বাজারের ঘোষ পরিবার এখন চাইছেন প্রৌঢ়া যে পরিস্থিতিতেই থাকুন না কেন, কিছু একটা খবর মিলুক।
প্রৌঢ়া কী অবস্থায় রয়েছেন, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন তাঁর পুত্র এবং পুত্রবধূ। আত্মীয়দের চার পরিবারের সঙ্গে প্রৌঢ়া একাই রওনা দেন প্রয়াগরাজের উদ্দেশে। পুণ্যলাভের আশায় যাচ্ছেন, এই ভেবে পরিবারের কেউ আপত্তিও জানাননি। মালদহ থেকে দু’টি গাড়িতে করে তাঁরা রওনা দেন। সোমবার পৌঁছে যান প্রয়াগরাজে। কিন্তু সেখানে গিয়ে যে প্রৌঢ়া এমন একটি পরিস্থিতিতে পড়বেন, তা দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি তাঁর পুত্র এবং পুত্রবধূ।