পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ডে মুখে মাস্ক ছাড়াই কাটা তরমুজ বিক্রি চলছে। আশপাশের লোকজনের মুখেও নেই মাস্ক। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
দৈনিক করোনা সংক্রমণে রাশ টানা যাচ্ছে না পুরুলিয়ায়। বৃহস্পতিবার জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্র জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩২৩ জনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তবে গত কয়েকদিনের তুলনায় দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কম। এ দিন পর্যন্ত জেলায় অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা ২,৪৭৬। বুধবার রাতে হাতোয়াড়া কোভিড হাসপাতালে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে নতুন করে সুস্থ হয়েছেন ৮৬ জন।
পরিস্থিতি পর্যালোচনায় এ দিন জেলায় এসে প্রশাসন, স্বাস্থ্য ও বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেন বর্ধমান বিভাগের কমিশনার তথা পুরুলিয়ার কোভিডের নোডাল অফিসার এ সুব্বাইয়া। পরে, জেলাশাসক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেলার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’’
সচেতন করতে পুলিশ ও প্রশাসন টানা প্রচার চালাচ্ছে। তাতেও এক শ্রেণির মানুষের হুঁশ ফিরছে না। এ দিনও পুরুলিয়া শহরের বাসস্ট্যান্ডে মাস্কহীন অনেককে ভিড়ের মধ্যে দেখা গিয়েছে। পুরুলিয়া মেডিক্যালের ডাক্তার নয়ন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুরুলিয়া শহরে প্রায় ৫০০ জন করোনা আক্রান্ত, তবুও রাস্তায় মাস্ক ছাড়া লোকে ঘুরছে!’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, করোনা সংক্রমণের প্রথম পর্ব ও দ্বিতীয় পর্ব মিলিয়ে জেলায় সংক্রমণের হার ৩.৪৪ শতাংশ। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, ‘‘দু’টি পর্ব মিলিয়ে জেলার সংক্রমণের হার রাজ্যের তুলনায় এখনও কম। তবে পরীক্ষার নিরিখে বর্তমানে পুরুলিয়া জেলার সংক্রমণের হার যথেষ্ঠ উদ্বেগজনক। বর্তমানে জেলার সংক্রমণের হার ২০ শতাংশ।’’
জেলা সদরই নয়, পুরুলিয়ার বিভিন্ন ব্লক থেকে আক্রান্তদের হাতোয়াড়া ক্যাম্পাসের কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। একাধিক ব্লকেও বেড়ে চলেছে সংক্রমণের হার। পরিস্থিতির মোকাবিলায় শয্যার সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তুতি নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। জেলাশাসক জানিয়েছেন, জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বেসরকারি যত নার্সিংহোম রয়েছে, প্রতিটিতে দশটি করে শয্যা প্রস্তত রাখতে বলা হয়েছে। মোট ১৬টি নার্সিংহোমে ১৬০টি শয্যা বাড়ানো হচ্ছে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত বলেন, ‘‘বেসরকারি নার্সিংহোমগুলিকে নিয়ে ইতিমধ্যেই বৈঠক করা হয়েছে। বেসরকারি নার্সিংহোমে যদি কেউ চিকিৎসা করাতে চান, অসুবিধা হবে না। এ ছাড়া, রঘুনাথপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে আরও ৫০টি শয্যা বাড়ানো হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু করা হবে।’’ এ ছাড়া, এই পরিস্থিতিতে যে সমস্ত ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করছেন, তাঁদের যাতায়াতের জন্য যানবাহনের কিছু সমস্যা নিয়েও এ দিনের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।