প্রতীকী ছবি
ছিল ত্রিশ। সেটাই এক লাফে হল চুয়ান্ন! নতুন করে ২৪ জনের করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে জেলায়।
এই ২৪ জনের প্রত্যেকেই পরিযায়ী শ্রমিক। অধিকাংশেরই মহারাষ্ট্র যোগ রয়েছে। এরই মধ্যে ওই রাজ্য থেকে আরও অনেকগুলি ট্রেনে এ রাজ্য ও জেলায় শ্রমিকেরা ফিরছেন। সব মিলিয়ে তাই প্রমাদ গুনছে বীরভূম জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর। এই ২৪ জনকে বোলপুর ও দুর্গাপুরের কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করানো হবে বলে প্রাথমিক ভাবে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে কলকাতার নাইসেড থেকে ওই ২৪ জনের রিপোর্ট জেলায় পৌঁছয়। ২৪ জনের মধ্যে ৯ জন মুরারই ২ ব্লকের বাসিন্দা, ৭ জন নলহাটি ১ এবং ২ জন মুরারই ১ ব্লকের বাসিন্দা।
এ ছাড়া, রামপুরহাট ১, রামপুরহাট ২, ময়ূরেশ্বর ১, ময়ূরেশ্বর ২, নলহাটি ২ এবং ইলামবাজার ব্লক থেকে এক জন করে আক্রান্তের হদিস মিলেছে। এঁদের মধ্যে রয়েছে রামপুরহাট শহরের বাসিন্দা এক নাবালক। সে হুগলি থেকে ফিরেছে।
এখনও পর্যন্ত জেলায় যত জন করোনা-আক্রান্তের হদিস মিলেছে, তার মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি রামপুরহাট মহকুমার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানাচ্ছে, এই মহকুমা থেকেই জেলার সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ ভিন্ জেলা ও ভিন্ রাজ্যে কাজ করতে যান। মুরারই ১ ও ২ এবং নলহাটি ১ ও ২—এই চারটি ব্লক থেকেই সব থেকে বেশি শ্রমিক বাইরের রাজ্যে কাজ করতে যান। এ ছাড়া রামপুরহাট ১ ও ২ এবং ময়ূরেশ্বর ১ ব্লক থেকেও অনেকে যান।
বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের রাজ্য সভাপতি সামিউল ইসলামের দাবি, জেলার কত জন শ্রমিক অন্যান্য রাজ্যে কাজ করেন, সেই হিসেব জেলা প্রশাসন বা রাজ্য সরকারের কোনও দফতরের কাছে নেই। যদিও প্রশাসনের এক আধিকারিকের বক্তব্য, ইচ্ছে হলে অনেকে রাজ্যের বাইরে কাজ করতে যান, আবার ইচ্ছে হলে রাজ্যে ফিরে আসেন। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁদের তথ্য রাখাও মুশকিল হয়। তবে, সূত্রের খবর, জেলায় এখনও পর্যন্ত প্রায় দশ হাজার শ্রমিক বাইরে থেকে ফিরেছেন। যাঁদের বেশির ভাগই রামপুরহাট মহকুমার বাসিন্দা। এবং সিংহভাগই ফিরেছেন দেশের সবেচেয়ে বেশি সংক্রামিত রাজ্য মহারাষ্ট্র থেকে।
জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘পরিযায়ীরা সংক্রামিত এলাকা থেকে জেলায় ঢুকেছেন ফলে অনেকের রিপোর্ট করোনা পজ়িটিভ হবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে উদ্বেগের বিষয় আক্রান্তদের অধিকাংশেরই করোনা উপসর্গ নেই। নিয়ম অনুযায়ী তাঁদের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানোর পরে তাঁদেরকে কঠোর ভাবে গৃহ নিভৃতবাসে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
যদিও শ্রমিকদের অনেকেই সেই গৃহ নিভৃতবাসে নিয়মাবলি না মেনে পরিবারের বয়স্ক থেকে শিশুদের সংস্পর্শে এসেছেন, এমনকি পড়শিদের সঙ্গেও মিশেছেন বলে সূত্রের খবর। যা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের চিন্তা আরও বাড়িয়েছে।