বারী জাগদা পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ ১১ জন সদস্য পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নিজস্ব ছবি।
প্রধানমন্ত্রী আবাস প্লাস যোজনায় শাসকদলের বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতি’র অভিযোগে শোরগোল পড়েছে রাজ্য জুড়ে। ‘ক্ষোভ’ তৈরি হয়েছে নিচুস্তরে। সেই আবহে পুরুলিয়ার তৃণমূল পরিচালিত বারী জাগদা পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ ১১ জন সদস্য পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে পঞ্চায়েতে সিপিএমের সদস্যও রয়েছেন। সোমবার নিজেদের মধ্যে বৈঠকের পরেই তাঁরা সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানান মানবাজার ২ ব্লকের ওই পঞ্চায়েত প্রধান অনিমেষ মাহাত। তিনি জানান, মঙ্গলবারই তাঁরা বিডিওর কাছে ইস্তফাপত্র জমা দেবেন।
আবাস প্লাসের উপভোক্তাদের তালিকা ধরে রাজ্য জুড়ে সমীক্ষা চলেছে। ত্রিস্তরীয় সমীক্ষা শেষে বহু উপভোক্তার নাম বাদ পড়েছে সেই তালিকা থেকে। অভিযোগ, প্রকৃত উপভোক্তা হওয়া সত্ত্বেও অনেকের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে পুরুলিয়াতেও বিগত কয়েক দিন ধরেই বিক্ষোভের ঘটনা ঘটছে। তার মধ্যেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলেন জাগদা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। শুধু তিনিই নয়, ইস্তফা দিতে চেয়েছেন আরও ১১ জন পঞ্চায়েত সদস্য।
পঞ্চায়েত প্রধান অনিমেষ বলেন, ‘‘আবাস যোজনায় যোগ্য ব্যক্তিদের যে তালিকা তৈরি করা হয়েছে, তাতে আমরা খুশি নই। তাই আমরা ১১ জন সদস্য এ নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, আগামিকাল আমরা বিডিও সাহেবের কাছে ইস্তফাপত্র জমা দেব।’’
ঘটনাচক্রে, গত শনিবার আবাস প্লাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে গ্রামে ‘ক্ষোভের’ আবহে মুর্শিদাবাদের মালাহাটি পঞ্চায়েতে গণইস্তফা প্রধান, উপপ্রধান-সহ ১৭ জন সদস্য। মালিহাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সৈয়দ নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘‘যাঁরা ঘর পাওয়ার উপযুক্ত, তাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাড়ায় গেলে মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়তে হবে আমাদের। আত্মরক্ষার্থেই আমার পদত্যাগ করলাম। বাড়িতে পরিবার আছে। পাড়ার লোকজন ওদের ঘিরে ধরে মারলে কী হবে? আমাদের নিরাপত্তা কে দেবে? জনরোষের ভয়েই পদত্যাগ করেছি।’’ উপপ্রধান মনিকা দাসও বলেন, ‘‘মাটির বাড়ি যাঁদের, তাঁরা ঘর পাচ্ছেন না। আর যাঁদের পাকা বাড়ি, তাঁরা দুটো-তিনটে করে পাচ্ছে। মানুষ কেন শুনবে? আমাদের তো পেটাবেই!’’ তার পরেই এ বার পুরুলিয়ার পঞ্চায়েতে গণইস্তফার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।