রাজ্যের ৭টি পুরনিগম এলাকা বাদে, ১২১টি পুরসভায় আর্থিক অপচয় রুখতে এই নজরদারি চালানো হবে। ফাইল চিত্র।
আর্থিক অপচয় রুখতে এ বার রাজ্যের পুরসভাগুলিতে নজরদারি করতে চায় পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। সম্প্রতি এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। শুক্রবার পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে একটি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দফতরের প্রধান সচিব খলিল আহমেদ-সহ উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। বৈঠকে সমস্ত জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক ও শীর্ষ আধিকারিকেরাও উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তারা এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেন জেলা স্তরের আধিকারিকদের। রাজ্যের ৭টি পুরনিগম এলাকা বাদে, ১২১টি পুরসভায় আর্থিক অপচয় রুখতে এই নজরদারি চালানো হবে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রত্যেক জেলায় একজন করে অতিরিক্ত জেলাশাসক ও ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পুরসভাগুলিতে নিয়মিত বিশেষ পর্যবেক্ষণ করবেন। পুরসভায় বরাদ্দ হওয়া টাকা ঠিক মতো খরচ হচ্ছে কিনা, নির্দিষ্ট প্রকল্পে বরাদ্দ টাকা সেই প্রকল্পেই ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা, সঠিক সময়ে জেনারেল ও পারফরমেন্স অডিট হচ্ছে কিনা— মূলত এই বিষয়ে নজরদারি করা হবে। অডিটে অনিয়ম ধরা পড়লে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখবেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তা।
রাজ্য সরকারের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া অর্থে গ্রামীণ উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্পে অর্থ খরচ নিয়ে কেন্দ্রের কাছে একাধিক অভিযোগের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্যকে। এমনকি সেইসব অভিযোগের কারণেই বহু প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই ধরনের ঘটনা যাতে পুরসভাগুলিতে রুখে দেওয়া সম্ভব হয়, সেই কারণেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, পূর্বের ভুলভ্রান্তি থেকে শিক্ষা নিয়েই রাজ্য সরকার এমন উদ্যোগ নিচ্ছে। আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তুলে প্রায় আট মাস আবাস যোজনা এবং সড়ক যোজনার টাকা আটকে রেখেছিল কেন্দ্র। এখনও আটকে ১০০ দিনের কাজের টাকা। গত এক বছর ধরে বকেয়া পড়ে রয়েছে। তাই পুরসভা এলাকাগুলির ক্ষেত্রে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি আটকাতেই রাজ্যের এই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে। বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের তরফে পুরসভাগুলির চেয়ারম্যানদের যে সমস্ত নির্দেশিকা দেওয়া হয়, তা এ বার থেকে জেলাশাসকদেরও পাঠানো হবে। এখন থেকে পুরসভাগুলির সঙ্গে আগের থেকে বেশি যোগাযোগ রাখবেন সংশ্লিষ্ট জেলার জেলাশাসকরা।