অবরোধে পরীক্ষার্থীরাও।
বিভিন্ন দাবিদাওয়া তুলে রবিবার সকাল থেকে রেল ও সড়ক অবরোধ করল একাধিক আদিবাসী সংগঠন। এর ফলে উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু পরীক্ষার্থী পিএসসি ক্লার্কশিপ দ্বিতীয় পর্বের পরীক্ষা দিতে সময় মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে পারেননি। প্রায় সকলেরই কেন্দ্র পড়েছিল শিলিগুড়িতে। প্রতিবাদ জানিয়ে পরীক্ষার্থীরাও এক সময়ে কিছু ক্ষণের জন্য অবরোধে নামেন। বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে (পিএসসি) অনুরোধ করা হয়, এই পরীক্ষার্থীদের বিষয়টি যেন তারা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পিএসসি-র তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়, এই পরীক্ষার্থীরা তথ্যপ্রমাণ-সহ আবেদন করলে তাঁদের পরীক্ষার জন্য আর একটি দিন ঠিক করে দেওয়া হবে।
রবিবার সকাল থেকে ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টি-সহ একাধিক আদিবাসী সংগঠন উত্তরবঙ্গ এবং লাগোয়া ঝাড়খণ্ড ও বিহারে বিভিন্ন জায়গায় রেল ও সড়ক অবরোধের ডাক দেয়। ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে কমিটির সভাপতি মোহন হাঁসদা বলেন, “২০২১ সালে জনগণনা শুরু হবে। কিন্ত এখনও দেশে আদিবাসীরা ধর্মভিত্তিক পরিচয় পাননি। এ জন্য দেশ জুড়ে সারনা ধর্ম কোড চালু করার দাবিতে এই বিক্ষোভ অবরোধ।’’
সেই অবরোধেই আটকে পড়েন মালদহ, বালুরঘাট, রায়গঞ্জ এবং দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু পরীক্ষার্থী। প্রশাসন সূত্রের খবর, শিলিগুড়িতে ২৬টি কেন্দ্রে ৯ হাজারের মতো পরীক্ষার্থীর পরীক্ষায় বসার কথা ছিল। সকাল ১১টা থেকে পরীক্ষা শুরুর কথা। ট্রেন, সড়কের বাধা কাটিয়ে যাঁরা পৌঁছতে পেরেছিলেন, তাঁদেরও পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। দুর্গাপুর থেকে এসেছেন সুরজিৎ কোনার। তিনি বলেন, ‘‘পরীক্ষা শুরুর মুহূর্তে এসেও ঢুকতে পারিনি।’’ মালদহ থেকে এসেছিলেন সাহরিয়ার আহমেদ। তাঁর কথায়, ‘‘যোগাযোগের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তাতেই গালে হাত দিয়ে বসেছিলাম। পরীক্ষা দেওয়া হল না।’’
রেল সূত্রের খবর, অবরোধের জেরে গুয়াহাটি-আনন্দবিহার এক্সপ্রেস, অমৃতসর-ডিব্রুগড়, শিয়ালদহ-নিউ জলপাইগুড়ি এক্সপ্রেস, শিয়ালদহ-নিউ আলিপুরদুয়ার স্পেশাল ট্রেন-সহ একাধিক ট্রেন আটকে পরে। অবরোধ উঠে গেলে অনেক পরীক্ষার্থী বিক্ষোভ দেখাতে বিহারের আজমনগর রোড স্টেশনে পাল্টা অবরোধ করেন। সেখানে তখন দার্জিলিং মেল দাঁড়িয়ে। তাতে ছিলেন বিমল গুরুং। তিনি কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করার পরে ট্রেন থেকে নেমে গাড়িতে শিলিগুড়ির দিকে রওনা দেন।
অবরোধ এবং পরীক্ষার্থীদের বিক্ষোভের খবর চাউর হওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই রাজ্য সরকারের তরফে টুইট করে পিএসসি-কে ফের পরীক্ষা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। তারও কিছুক্ষণ পরে পিএসসি-র তরফে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। পরীক্ষার্থীরাও হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন।