এতদিন স্টাফ স্পেশালে যাতায়াত করছিলেন তাঁরা। ফাইল চিত্র।
গত বছর মার্চে লকডাউনে বন্ধ হয়েছিল ট্রেন। সেই সময় থেকেই ‘কনসেশন ট্র্যাভেলিং অথরিটি’ বা ‘সিটিএ’ পাচ্ছেন না রেলকর্মীরা। এখন ট্রেন পরিষেবা প্রায় স্বাভাবিক হলেও ‘সিটিএ’ দেওয়া চালু হয়নি বলে অভিযোগ। খড়্গপুর রেল ডিভিশনে কর্মক্ষেত্রে পৌঁছতে অনেক রেলকর্মী বিনা টিকিটেই লোকাল ট্রেনে উঠছেন। দিতে হচ্ছে জরিমানাও।
‘সিটিএ’ দেখিয়ে মাসিক মোট ভাড়ার এক-তৃতীয়াংশ টাকায় বিশেষ টিকিট কাটতে পারেন রেলকর্মীরা। এতদিন স্টাফ স্পেশালে যাতায়াত করছিলেন তাঁরা। তাই ‘সিটিএ’ বন্ধ থাকলেও সমস্যা হয়নি। লোকাল ট্রেন চালু হতে বন্ধ হয়েছে স্টাফ স্পেশাল। তার পরেই সমস্যা বেড়েছে রেলকর্মীদের। বিনা টিকিটের যাত্রা ঠেকাতে সম্প্রতি কড়া মনোভাব নিয়েছে রেল। খড়্গপুর ডিভিশনের রেলকর্মীদের ক্ষোভ, তাঁদের সঙ্গে সাধারণ যাত্রীদের মতোই ব্যবহার করছেন টিকিট পরীক্ষকদের একাংশ। রেলের পরিচয়পত্র দেখিয়েও ছাড় মিলছে না। খড়্গপুর রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার তথা জনসংযোগ আধিকারিক রাজেশ কুমার অবশ্য বলেন, “বিনা টিকিটে ট্রেনযাত্রা করলে জরিমানা দিতেই হবে। সিটিএ দেওয়া হচ্ছে কি না, সেই বিষয়ে আমার জানা নেই।”
মঙ্গলবারও খড়্গপুর স্টেশনে ছিল বিশেষ টিকিট পরীক্ষা অভিযান। বসেছিল ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাস। এ দিন সেখানে বিনা টিকিটের ৩৭ জন রেলযাত্রীকে পাকড়াও করা হয়। তাঁদের মধ্যে খড়্গপুর রেল কারখানার ১৬ জন কর্মী ছিলেন। তাঁদেরও জরিমানা করা হয়। ধরা পড়ার পরে এক রেলকর্মী বলেন, “টিকিট পরীক্ষককে পরিচয়পত্র দেখানো সত্ত্বেও উনি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠিয়ে দেন। আমরাও জানি বিনা টিকিটের ট্রেনযাত্রা অপরাধ। তাই ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নিজেদের ভুল স্বীকার করে জরিমানা দিয়েছি। কিন্তু এর জন্য দায়ী তো রেল ও আমাদের কর্মী সংগঠনগুলি।” এ দিনই খড়্গপুর স্টেশনে গিয়ে এ নিয়ে প্রতিবাদ জানান রেলের মেনস কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা। ওই সংগঠনের নেতা বিপ্লব দাসচৌধুরী বলেন, “রেল কর্তৃপক্ষ কর্মী-সদস্যদের সিটিএ থেকে বঞ্চিত করছেন। আগামী দিনে সিটিএ না দিলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে।”
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের রেলের ম্যাজিস্ট্রেট হিমাদ্রিকুমার নাথ বলেন, “যাঁরা ধরা পড়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে রেলকর্মী থাকতেই পারেন। তবে সকলেই নিজেদের দোষ কবুল করেছেন। বিনা টিকিটে ট্রেন যাত্রা অপরাধ হওয়ায় যা করণীয় তাই করেছি।”