নিজস্ব চিত্র।
কচিকাঁচাদের কোলাহল-কলরবে আবার মুখরিত স্কুলপ্রাঙ্গণ। প্রায় দু’বছর পর বুধবার ছোটদের স্কুল খুলে গেল রাজ্যে। রাজ্যে অতিমারির প্রভাব কিছুটা স্তিমিত হতেই চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতেই চালু হয়েছে অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস। খুলেছে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ও। তার পর গত সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দিতেই সোমবার প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক অর্থাৎ প্রথম থেকে সপ্তম শ্রেণির ক্লাস শুরুর নির্দেশিকা জারি হয় রাজ্যে।
সেই মতোই ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’ ছেড়ে বুধবার স্কুলের চৌহদ্দিতে বাচ্চাদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি দেখা গেল জেলা জুড়ে। কচিকাঁচাদের কথাতেই স্পষ্ট, স্কুলে আসার জন্য মুখিয়ে ছিল তারা। পূর্ব বর্ধমানের বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল স্কুলের খুদে পড়ুয়া শুভঙ্কর আচার্যের কথায়, ‘‘অনলাইন পড়াশোনায় স্যরদের সঙ্গে তেমন যোগাযোগ ছিল না। ভাল লাগত না। স্কুলেই ভাল পড়াশোনা হয়। বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করতে পারব। কত দিন পর সবার সঙ্গে দেখা হল। এর চেয়ে মজার আর কী হতে পারে!’’ মাঝে ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’ চালু হলেও তা পছন্দ হয়নি উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের পার্বতীদেবী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খুদে পড়ুয়াদের। এক খুদের সরল স্বীকারোক্তি, ‘‘ওতে মজা লাগছিল না। এত দিন পর সত্যিকারের স্কুলে এসেছি মনে হচ্ছে!’’
কোথাও কোথাও আবার বাচ্চাদের স্বাগত জানাতে স্কুল-চত্বর বেলুন, ফুল দিয়ে সাজিয়ে তুলেছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ধুপগুড়ি ব্লকের কাজিপাড়া শিক্ষা নিকেতনে আগত খুদেদের হাতে খাতা, পেন্সিল, চকোলেট আর কেক তুলে দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে দেওয়া হয়েছে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজারের বোতলও। বীরভূমের সিউড়ি এক নম্বর ব্লকের অন্তর্গত চাঙ্গুরিয়া গ্রামের আড্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আবার পড়ুয়াদের কপালে চন্দনের ফোঁটা দিয়ে বরণ করা হয়।
তবে এক দিনের নোটিসে কোভিডবিধি বিধি মেনে স্কুল খোলা এবং স্কুলপ্রাঙ্গণ সাফসুতরো করার কাজে যথেষ্ট হিমশিম খেতে হয়েছে শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অন্যান্য কর্মীদের। কিন্তু তার পরেও চুঁচুড়ার মিয়ারবেড় জিএসএফপি স্কুলের শিক্ষিকা শাশ্বতী বসু বলছেন, ‘‘হ্যাঁ, সমস্যা একটু হয়েছেই। এত দিন পর স্কুল খুলেছে, এর চেয়ে আনন্দের আর কী হতে পারে!’’