প্রতীকী ছবি।
দুর্গাপুজোর পর থেকেই কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বাড়ছে দৈনিক কোভিড সংক্রমণ। তা রুখতে সক্রিয় হয়েছেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। যে সকল এলাকায় সংক্রমণ বাড়ছে, সেখানে গণ্ডিবন্ধ এলাকা তৈরি করে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হচ্ছে। জন সাধারণকে সতর্ক করার পাশাপাশি কোভিড বিধি অমান্যকারীদের গ্রেফতার করে ক়ড়া বার্তা দিচ্ছে জেলা প্রশাসন।
বর্ধমান শহরে সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়েছে গত কয়েক দিনে। রবিবার রাত থেকেই সেখানে প্রচার অভিযান চালাচ্ছে জেলা প্রশাসন। সোমবার সকালে কার্জন গেটে সাধারণ মানুষকে সচেতন করেছেন পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক। তবুও হেলদোল নেই একাংশের মধ্যে। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিয়েছে প্রশাসন। নাইট কার্ফু অমান্য এবং কোভিড বিধি ভঙ্গের জন্য সোমবার রাতে ৬৩ জনকে গ্রেফতার করেছে বর্ধমান থানার পুলিশ। তবে গ্রেফতার হওয়াদের ব্যক্তিগত বন্ডে সই করিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সচেতনতার লক্ষ্যে সহনশীলতা দেখানো হচ্ছে। কিন্তু এই প্রবণতা চলতে থাকলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্ধমান শহরের পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমানের অন্যান্য এলাকাতেও ফের থাবা বসাচ্ছে করোনাভাইরাস। বেশি মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসতে গলসি এক নম্বর ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে টিকাশিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। শিবিরের আগের দিন ভোটার লিস্ট ধরে গ্রামবাসীদের বাড়িতে কুপন দিয়ে আসছেন আশাকর্মীরা।
কোভিড বিধি ভেঙে বর্ধমানে গ্রেফতার। নিজস্ব চিত্র।
পূর্ব বর্ধমানের মতো উত্তর ২৪ পরগনাতেও বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। সে জন্য জেলা জুড়ে নতুন করে ৫১টি গণ্ডিবন্ধ এলাকা তৈরি করা হয়েছে। বারাসত, ব্যারাকপুর, দক্ষিণ দমদম পুর এলাকায় রয়েছে অধিকাংশ গণ্ডিবদ্ধ এলাকা। পাশাপাশি মাইকে সচেতনতা প্রচারও চালাচ্ছে পুলিশ। এ নিয়ে বারাসতের মহকুমা শাসক সোমা সাউ বলেছেন, ‘‘উৎসবের সময় অনেক মানুষ কাছাকাছি এসেছিল। সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়েছে। কন্টেনমেন্ট এলাকা তৈরি করে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।’’ পাশাপাশি প্রচারেও জোর দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বর্ধমান এবং উত্তর ২৪ পরগনার পাশাপাশি হাওড়া এবং হুগলিতেও গণ্ডিবন্ধ এলাকার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। একই চিত্র দেখা গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও। ওই জেলাতেও বেড়ছে সংক্রমণ। যার অধিকাংশই খড়্গপুর এবং মেদিনীপুর শহরে। দুই শহরে মোট ১২টি গণ্ডিবদ্ধ এলাকা তৈরি করা হয়েছে। আগামী সাত দিন সেখানে কড়া নজরদারি চালানো হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কোমলও এ নিয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করেছেন।
দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন এলাকার মতো উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে গত কয়েক দিনে আক্রান্ত হয়েছেন বেশ কয়েক জন। কিন্তু সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতার লক্ষণ নেই। রাস্তাঘাটে অধিকাংশের মুখেই ঠিক মতো থাকছে না মাস্ক। নৈশ কার্ফুও অগ্রাহ্য করছেন অনেকে। সোমবার রাতে মাইকে প্রচারের পাশাপাশি রায়গঞ্জ শহরে টহল দেয় পুলিশ। পথচলতি মানুষের হাতে মাস্কও তুলে দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে।