প্রতীকী ছবি।
চার পুর নিগমে ভোটের ভবিষ্যৎ চলতি সপ্তাহের মাঝামাঝি চূড়ান্ত হওয়ার ইঙ্গিত দিলেও ভোটের প্রস্তুতিতে ফাঁক রাখতে চাইছে না রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সম্প্রতি রাজ্য পুলিশ পুরভোটের নিরাপত্তার রূপরেখা কমিশনের কাছে জমা দিয়েছে। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনুমান, কলকাতা পুর নিগমের ভোটের মতো চারটি পুর নিগমের আসন্ন নির্বাচনেও নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকবে রাজ্য পুলিশের উপরেই। ওই চার পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের ব্যাপারে ভাবনাচিন্তার অবকাশ আপাতত আর থাকছে না।
২২ জানুয়ারি বিধাননগর, শিলিগুড়ি, আসানসোল ও চন্দননগর পুর নিগমের ভোট হওয়ার কথা। এই নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে যে-মামলা হয়েছে, আজ, মঙ্গলবার তার শুনানি আছে। ইতিমধ্যেই করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় পুরভোট পিছিয়ে দেওয়ার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহলে। এমনকি ভোট পিছোনোর ইঙ্গিত দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁর দল অবশ্য এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে। হাই কোর্টেও ভোট পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে।
আজকের শুনানি মূলত তা নিয়েই। এই বিষয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে হলফনামাও জমা দিতে বলেছে আদালত।
এ দিকে, ২২ তারিখকে সামনে রেখেই প্রস্ততি চলছে কমিশনের। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, রাজ্য প্রশাসন সম্প্রতি পুরভোটে নিরাপত্তার ব্যাপারে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে যে-প্রস্তাব দিয়েছে, তাতে কমবেশি ন’হাজার পুলিশকর্মীকে ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। শিল্পাঞ্চল হওয়ায় এবং পুর নিগমের আয়তনের কারণে তুলনায় বেশি পুলিশ পাঠানো হবে আসানসোলে। ওই পুর নিগমের বুথ-সংখ্যা ১০২০। বুথ-সংখ্যার ভিত্তিতে বিধাননগর (৪৬৮), শিলিগুড়ি (৪২১) এবং চন্দননগরে (১৬৯) প্রয়োজনীয় সংখ্যায় পুলিশ মোতায়ন করা হবে। কমিশন সূত্রে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে যে, সব বুথে সশস্ত্র পুলিশ এবং সিসি ক্যামেরা বাধ্যতামূলক।
কমিশন সূত্রের ব্যাখ্যা, একটি ভোটকেন্দ্রে একটি বুথ থাকলে সেখানে দু’জন সশস্ত্র এবং এক জন লাঠিধারী পুলিশকর্মীকে নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হবে। কোনও ভোটকেন্দ্রে একাধিক বুথ থাকলে সমানুপাতিক হারে পুলিশের সংখ্যাও বাড়বে। এক কমিশন-কর্তা বলেন, “কলকাতার পুরভোটে নিরাপত্তার যেমন পরিকল্পনা ছিল, আসন্ন ভোটে তেমনই ব্যবস্থা করা হবে।” কলকাতা পুরভোটে স্পর্শকাতর বুথের নিরাপত্তায় আরটি মোবাইল, এইচআরএফএস, কুইক রেসপন্স টিম (কিউআরটি), বিশেষ কিউআরটি-র ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বহিরাগতদের দাপাদাপি রুখতে ছিল পুলিশ পিকেট, নাকা তল্লাশির ব্যবস্থাও ছিল। সেই ভোটে অন্তত ২৩,৫০০ পুলিশকর্মীকে ব্যবহার করেছিল কমিশন।