হিংসার বিরুদ্ধে ছিল বলেই খুন: শাবানা

দুর্গাপুজোর নবমীর রাতে খুন হন কুরবান। তাঁর খুনে মোবারেক ধরা পড়ায় কিছুটা হতবাক কুরবানের স্ত্রী শাবানাবানু খাতুন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৪৯
Share:

কুরবান শেখ। —ফাইল চিত্র

একদিন আগেই কুরবান শা খুনে মেচেদা থেকে ধরা পড়েছেন বিজেপি নেতা আনিসুর রহমান এবং তাঁর সঙ্গী মোবারক করিম খান। আদালতের নির্দেশে আপাতত দু’জন পুলিশ হেফাজতে। পুলিশ জানিয়েছে, আনিসুরকে তারা জেরা শুরু করেছে। প্রয়োজনে তাঁকে ওই মামলায় অন্য ধৃতদের সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হতে পারে। আর কুরবান- হত্যাকাণ্ডের বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে জোরদার তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

Advertisement

দুর্গাপুজোর নবমীর রাতে খুন হন কুরবান। তাঁর খুনে মোবারেক ধরা পড়ায় কিছুটা হতবাক কুরবানের স্ত্রী শাবানাবানু খাতুন। মঙ্গলবার তিনি জানান, মোবারকের সঙ্গে তাঁর স্বামীর এক সময় ভাল সম্পর্ক ছিল। তাঁদের বাড়িতে যে কোনও অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতদের তালিকায় থাকত মোবারকের নাম। আনিসুর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে ক্রমশ তাঁর ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন মোবারক বলে দাবি শাবানার। শাবানা বলেন, ‘‘মোবারক আমার স্বামীর সঙ্গে এক সময় ওঠাবসা করতেন। আমার স্বামীর থেকে আগে অনেক সুযোগও নিয়েছেন। উনি এই খুনের সঙ্গে যুক্ত ভাবতেও পারছি না। আনিসুর ও মোবারক—দুজনেরই ফাঁসি চাই।’’

পাশাপাশি, এ দিন শাবানা দাবি করেছেন, তাঁর স্বামী অহিংসার পথ বেছে নেওয়াতেই তাঁকে খুন হতে হয়েছে। বাম আমলে রাজনৈতিক হিংসার কারণে সব সময়ই সংবাদের শিরোনামে থাকত পাঁশকুড়ার মাইশোরা। মারধর, ঘরবাড়ি ভাঙচুর ছিল রোজকার ঘটনা। ২০১১ সালে রাজ্যে পরিবর্তনের পর থেকে বদলাতে শুরু করে এলাকার ছবিটা। তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল এবং গুটিকয়েক বিরোধী নেতার সঙ্গে বিবাদের জেরে কুরবান অনুগামীদের সঙ্গে মাঝেমধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও আপাত শান্তই ছিল মাইশোরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, গত তিন বছরে সংঘর্ষের তেমন কোনও ঘটনা ঘটেনি এখানে।

Advertisement

গত লোকসভা নির্বাচনে মাইশোরায় বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষের প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল কুরবান অনুগামীদের বিরুদ্ধে। তবে সে বারও কোনও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। কুরবানের স্ত্রীর দাবি, গত কয়েক বছর ধরে তাঁর স্বামী নিজেকে অনেকখানি বদলে ফেলেছিলেন। রাজনৈতিক সংঘর্ষ এড়িয়ে চলতেন।

আবার কুরবান অনুগামীদের একাংশের দাবি, সম্প্রতি মাইশোরা এলাকায় কয়েক জন বিজেপি সমর্থককে নিজের অফিসে ডেকে তাঁদের এলাকায় বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে কাজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন কুরবান।

এই পরিস্থিতিতে কুরবানের খুন হওয়া প্রসঙ্গে শাবানা বলেন, ‘‘কয়েক বছর ধরে আমার স্বামী সংঘর্ষ এড়িয়ে চলছিলেন। এলাকায় কেউ ওঁর বিরোধিতা করলেও তাঁকে ডেকে বোঝাতেন। ওর এই অহিংসার সুযোগ নিয়েই ওঁকে খুন করা হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement