— প্রতীকী চিত্র।
বছর দেড়েক ধরেই মণিপুর উত্তপ্ত হয়ে আছে। গোয়েন্দারা বলছেন, সেই উত্তাপ প্রভাব ফেলেছে মাদকের কারবারেও। একদা মণিপুর ছিল মাদক কারবারের ‘পরিচিত’ ঘাঁটি। তার বদলে এ বার এ রাজ্যে মাদক ঢুকছে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ থেকে। সম্প্রতি রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) নদিয়ার কালীগঞ্জ থেকে দুই মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছিল। তাদের জেরা করেই পশ্চিম এবং মধ্য ভারতের মাদক কারবারের ‘রুট’ সম্পর্কে জানা গিয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রের দাবি।
সম্প্রতি নদিয়ার কালীগঞ্জ থেকে হানিফ শেখ ও মহম্মদ ইমরান নামে দু’জনকে গ্রেফতার করে এসটিএফ। উদ্ধার করা হয় ব্রাউন সুগারের ২৫০ গ্রাম কাঁচামাল (ক্রুড ব্রাউন সুগার)। হানিফ আগেও মাদক কারবারে ধরা পড়ে জেল খেটেছে। পুলিশের দাবি, জেরায় জানা গিয়েছে, মধ্যপ্রদেশের উজ্জ্বয়িনী থেকে হানিফ ওই মাদক নিয়ে এসেছিল। ইমরানের হাত ঘুরে তা পৌঁছে যেত মুর্শিদাবাদের লালগোলায়। সেখানে মাদক কারখানায় রাসায়নিক মিশিয়ে ব্রাউন সুগার তৈরি হত। এক গোয়েন্দাকর্তা বলেন, “কালীগঞ্জে বাজেয়াপ্ত করা মাদকের বাজারমূল্য প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা। সেই কাঁচামাল থেকে প্রায় এক কোটি টাকার ব্রাউন সুগার তৈরি হত।”
গোয়েন্দাদের দাবি, হানিফও আগে মণিপুর থেকে কাঁচামাল জোগাড় করত। কিন্তু গোলমালের জেরে সে এখন মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানের বিভিন্ন প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে কাঁচামাল জোগাড় করে সড়কপথে এ রাজ্যে নিয়ে আসছে।
গোয়েন্দাদের অনেকেই স্বীকার করছেন, এ রাজ্যের সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে মাদক কারবারের সক্রিয়তা নতুন নয়। প্রশাসনের সঙ্গে রীতিমতো চোর-পুলিশ খেলাও চলে মাদক কারবারিদের। কোন পথ দিয়ে মাদকের আনাগোনা চলে, তা-ও গোয়েন্দাদের অজানা নয়। এত দিন পুলিশের একাংশ নিশ্চিত থাকতেন যে, উত্তর-পূর্বের রাজ্য থেকেই মাদকের কাঁচামাল ঢুকবে। সেই মতো জালও বিছানো হত। কিন্তু মণিপুরের অশান্তির জেরে সেই পথে মাদকের আনাগোনা বন্ধ হয়েছিল। এক পুলিশকর্তার মতে, “মণিপুরের অশান্তির জেরে মাদক কারবার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু এ ভাবে যে নতুন রুট তৈরি হবে, অনেকেই আঁচ করেননি।”