সিআইডি-র হাতে জেনারুল গ্রেফতার হন গত শনিবার। প্রতীকী ছবি।
গরু পাচার মামলায় ধৃত জেনারুল শেখকে জেরা করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দাদের সন্দেহ গিয়ে পড়েছিল সীমান্তে পাহারার দায়িত্বে থাকা বিএসএফের একাংশের উপরে। ২০১৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত মুর্শিদাবাদ ও বীরভূমের বিভিন্ন এলাকায় নিযুক্ত পুলিশকর্মীরাও এ বার চলে এলেন সিআইডি-র তদন্তকারীদের নজরে।
সিআইডি সূত্রের খবর, গরু পাচার চক্রের মূল পান্ডা এনামুল হক এবং তার এক পলাতক আত্মীয় সিবিআই তদন্তের আওতায় চলে আসার পরে ওই এলাকায় গরু পাচারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিল জেনারুল। তদন্তকারীদের দাবি, স্থানীয় পুলিশ, শুল্ক দফতর এবং বিএসএফ বা সীমান্তরক্ষীদের একাংশকে ‘ম্যানেজ’ করে বাংলাদেশে গরু পাচারের কারবার চালাতেন জেনারুল। তাই সেই সময় ওই সব এলাকায় কোন কোন পুলিশকর্মী কর্তব্যরত ছিলেন এবং তাঁদের ভূমিকা কী ছিল, তা খুঁজে দেখার কাজ শুরু হয়েছে। অভিযোগ, গরু পাচারের টাকার ভাগ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছেই যেত। সিআইডি জানতে পেরেছে, পাচার বন্ধ হওয়ার আগে পর্যন্ত কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এক তদন্তকারী অফিসার জানিয়েছেন, পাচারের রুট এবং কোন পদ্ধতিতে বাংলাদেশে গরু পাঠানো হত, তা জানা দরকার।
সিআইডি-র অফিসারেরা জানান, জেনারুলকে জেরা করে জানা গিয়েছে, তিনি এক-একটা গরু দশ থেকে পনেরো হাজার টাকায় কিনে নিজের খাটালে রাখতেন। পরে তিন-চার গুণ দামে তা বিক্রি করে নদীপথে বাংলাদেশে পাচার করে দেওয়া হত। তদন্তকারীদের দাবি, পুলিশ এবং বিএসএফের একাংশ তো বটেই, সেই সঙ্গে স্থানীয় কিছু রাজনীতিবিদের সঙ্গেও যোগ ছিল জেনারুলের। প্রয়োজনে তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে জানান গোয়েন্দারা। গরু পাচারে যুক্ত সন্দেহে বেশ কয়েক জনকে ইতিমধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এবং তাঁদের মধ্যে স্থানীয় পঞ্চায়েতের কিছু কর্মীও আছেন।
সিআইডি-র হাতে জেনারুল গ্রেফতার হন গত শনিবার। বর্তমানে তিনি ১২ দিনের পুলিশি হেফাজতে আছেন। সঞ্জয় মালিক নামে অন্য এক ব্যবসায়ীকেও গরু পাচারের মামলায় নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করছেন সিআইডি-র গোয়েন্দারা।