Narendra Modi Cabinet Reshuffle

সামনেই তিন গুরুত্বপূর্ণ দিন বিজেপির, সংক্রান্তি মিটলেই অনেক বদল! সব জানেন মোদী-শাহ

শনিবার মকর সংক্রান্তি। তার পর বিজেপিতে অনেক বদল আসতে পারে। দলীয় সংগঠনের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাতেও রদবদলের সম্ভাবনা। আর সে সব নিয়ে জোর আলোচনা গেরুয়া শিবিরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৩ ১৬:৪৮
Share:

নানা রদবদলের জল্পনা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

মকর সংক্রান্তি শনিবার। আর তার পর পরই আসতে চলেছে নানা বদল। সবই নাকি ঠিক করে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সব জানেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। কিন্তু কী কী হতে পারে সেই অজানা পরিবর্তন, তা নিয়ে নানা জল্পনা গেরুয়া শিবিরে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে দলীয় সংগঠন— সবেতেই বদল আসতে পারে। অন্তত তেমনই মনে করছে বিজেপি শিবির।

Advertisement

মকর সংক্রান্তি সঙ্ঘ পরিবার তথা বিজেপির কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন। আরএসএস সারা বছরে যে ছ’টি উৎসব পালন করে তার মধ্যে এটি একটি। পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে রাজা সগরের ষাট হাজার মৃত পুত্রের প্রাণদানের কারণে গঙ্গাদেবীর মর্ত্যে তথা কপিলমুনির আশ্রমে আগমনের তিথি মকর সংক্রান্তি। রাশিচক্রের বিচারে এই তিথিটিতে সূর্য মকর রাশিতে প্রবেশ করে। বিজেপি নেতারা গোটা দেশেই হিন্দু রীতি মেনে ‘তিল-গুড়’ উৎসব পালন করবেন শনিবার। তার পরেই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দিন দলের জন্য। সংক্রান্তি পার হলে ১৫ জানুয়ারি থেকেই মোটামুটি ১৫ মাস পরের লোকসভা নির্বাচনের চূড়ান্ত পর্বের প্রস্তুতি শুরু করে দেবে গেরুয়া শিবির।

আগামী ৩১ জানুয়ারি সংসদে বাজেট অধিবেশন শুরু। তার আগেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় রদবদল আনতে পারেন মোদী। বিজেপি সূত্রে খবর, আগামী সোম ও মঙ্গলবার দিল্লিতে বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠক বসবে। লোকসভা নির্বাচনের জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। সেই অর্থে এই বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে বেশ কিছু সাংগঠনিক রদবদল আসতে পারে। অনেক মনে করছেন তার আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাতেও রদবদল হয়ে যাবে। তেমন হলে রবি, সোম, মঙ্গল হয়ে উঠবে তিন গুরুত্বপূর্ণ দিন। তবে রবিবার মন্ত্রিসভার রদবদল হবে কি না, তা নিয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।

Advertisement

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় রদবদলে ‘চমক’ থাকবে। তা নিয়ে নির্দিষ্ট কোনও তথ্য কারও কাছে না থাকায় তৈরি হয়েছে জল্পনা। তবে বিজেপির ইতিহাস বলে, জল্পনায় যা থাকে, বাস্তবে তা হয় না। এমন কিছু ঘটে, যা অভাবনীয়। রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে যা দেখা গিয়েছে। গত বছর জুলাই মাসে মন্ত্রিসভার সর্বশেষ রদবদলেও চমক দেখিয়েছিলেন মোদী। বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ দুই নেতা প্রকাশ জাভড়েকর এবং রবিশঙ্কর প্রসাদ বাদ গিয়েছিলেন। প্রাক্তন আইএএস অশ্বীন বৈষ্ণবকে নিয়ে এসে গুরুত্বপূর্ণ রেলমন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

গত কয়েক মাসে জাতীয় রাজনীতিতে বহু বদল এসেছে। মহারাষ্ট্রে বিজেপির সঙ্গী বদল হয়েছে। বিহারে নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেডের সঙ্গে জোট ভেঙেছে। গুজরাত বিধানসভা ভোটে ভাল ফল হয়েছে। আবার হিমাচল প্রদেশ ও দিল্লি পুরভোটে খারাপ ফল হয়েছে। সেই ফলাফলের পাশাপাশিই লোকসভা নির্বাচনে ওড়িশা, তেলঙ্গানা, পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যকে গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়ও রয়েছে। এই সবের প্রভাব পড়তে পারে মন্ত্রিসভার সম্ভাব্য রদবদলে। একই রাজনৈতিক সমীকরণের প্রভাব পড়তে পারে বিজেপির সংগঠনে।

বিজেপি শিবিরের জল্পনা বলছে, একনাথ শিন্ডে শিবিরের কেউ আসতে পারেন মন্ত্রিসভায়। রামবিলাস পাসোয়ানের পুত্র চিরাগকে ‘পুরস্কৃত’ করতে পারে গেরুয়া শিবির। তেমন হলে চিরাগের কাকা পশুপতি কুমারের মন্ত্রিত্ব থাকবে কি না, তা নিয়েও জল্পনা রয়েছে। নতুন মুখ যেমন আসতে পারে, তেমন অনেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দফতর বদলের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কার গুরুত্ব বাড়বে, কার কমবে, তা নিয়েও নানা আলোচনা চলছে।

গত রদবদলে বাংলা থেকে দুই প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং দেবশ্রী চৌধুরীকে বাদ দিয়েছিলেন মোদী। সেই জায়গায় আসেন বাংলার ৪ জন। সুভাষ সরকার, নীতীশ প্রামাণিক, শান্তনু ঠাকুর এবং জন বার্লা। এঁদের সকলেই ২০২৪ পর্যন্ত থাকবেন কি না, তা-ও নিশ্চিত নয়। কারও মন্ত্রিত্ব গেলে বাংলা থেকে নতুন কাউকে বেছে নেওয়া হবে কি না, তা নিয়েও নানা মত রয়েছে। তবে এই রদবদলে বাংলার তুলনায় বেশি গুরুত্ব পেতে পারে সামনেই বিধানসভা নির্বাচন থাকা কর্ণাটক, তেলঙ্গনা, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়।

বিজেপিতে সাংগঠনিক ভাবেও কিছু রদবদল হতে পারে। সর্বভারতীয় সভাপতি হিসাবে জেপি নড্ডার প্রথম দফার মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। তাঁর জায়গায় নতুন কাউকে আনা হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। কয়েকটি সম্ভাব্য নামও শোনা যাচ্ছে। তবে কেন্দ্রীয় বিজেপির এক নেতার দাবি, আরও একটি মেয়াদ সভাপতি থেকে যাবেন নড্ডা। লোকসভা নির্বাচনের আগে শীর্ষপদে বদল হবে না। তবে সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) পদে বদলের সম্ভাবনা খুব বেশি। এখন সেই দায়িত্বে থাকা বিএল সন্তোষকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। তবে সন্তোষের নেতৃত্বে লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাওয়ার পরে তা হবে কি না, সেটা ঠিক করবে নাগপুর। কারণ, বরাবর এই পদের মনোনয়ন আরএসএস করে থাকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement