বিচারপতি অমৃতা সিংহ। — ফাইল চিত্র।
আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর হবে মুর্শিদাবাদের রানিনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী কমিটির নির্বাচন। কলকাতা হাই কোর্টে মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছে রাজ্য সরকার। পঞ্চায়েত সমিতির যে ছ’জন কংগ্রেস সদস্যের বিরুদ্ধে এফআইআর রয়েছে, ওই দিন পর্যন্ত তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অমৃতা সিংহ। হাই কোর্টের নির্দেশ, পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচিত সভাপতি কুদ্দুস আলিকে জেল থেকে এনে ভোটদানের ব্যবস্থা করতে হবে। ভোটের দিন পর্যাপ্ত পুলিশের ব্যবস্থা করতে হবে। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি। ওই দিন নির্বাচন সংক্রান্ত রিপোর্ট আদালতে দিতে হবে।
মুর্শিদাবাদের রানিনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী কমিটি নির্বাচন হবে কবে করানো হতে পারে, সে বিষয়ে শুক্রবার রাজ্যের মত জানতে চেয়েছিলেন বিচারপতি সিংহ। তিনি জানিয়েছিলেন, মঙ্গলবারের (১৯ সেপ্টেম্বর) মধ্যে রাজ্যকে জানাতে হবে নতুন করে কবে নির্বাচন করানো হবে। সেই সময়সীমা মেনে স্থায়ী সমিতি নির্বাচনের পরিবর্তিত সময়সূচি জানানো হয় রাজ্যের তরফে।
গত ১১ সেপ্টেম্বর বিচারপতি সিংহ রানিনগর-২ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী কমিটি গঠনের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন। ফলে সভাপতি নির্বাচিত হলেও সেখানে স্থায়ী সমিতি নির্বাচনের কাজ থমকে যায়। ডোমকলের মহকুমা শাসককে হাই কোর্ট জানিয়েছিল, ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী কমিটি গঠনের বৈঠক করা যাবে না। শুক্রবারের শুনানিতে এ বিষয়ে রাজ্যের মত জানতে চেয়েছিলেন বিচারপতি সিংহ।
সভাপতি নির্বাচনে রানিনগরে জিতেছেন বাম সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী। বিরোধীদের অভিযোগ, স্থায়ী সমিতি গঠন করতে চেয়ে পুলিশকে ব্যবহার করে বিরোধীদের নিশানা করছে শাসকদল। স্থায়ী সমিতি গঠনের জন্য গত সোমবার দুপুর ১২টায় বৈঠক ডেকেছিলেন তৃণমূলের সদস্যেরা। তার আগেই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদে সদ্য নির্বাচিত কংগ্রেস সদস্য কুদ্দুসকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলেও হাই কোর্টে অভিযোগ জানানো হয়। সব মিলিয়ে কংগ্রেসের ছ’জন সদস্যের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। গ্রেফতারি এড়াতে তাঁরা পলাতক। হাই কোর্টে কংগ্রেসের আইনজীবী মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় জানান, ওই সদস্যেরা ভোটাভুটিতে অংশ নিতে চান।
ওই অভিযোগ শোনার পরেই স্থায়ী সমিতি নির্বাচনে স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি সিংহ। রানিনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতির মোট সদস্য সংখ্যা ৪২। এই পঞ্চায়েত সমিতিতে বাম-কংগ্রেস জোট সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও পরে কয়েক জন সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। গত শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সভাপতি নির্বাচনে জয়ের পরে কংগ্রেস এবং বাম কর্মী-সমর্থকেরা মিছিল বার করলে অশান্তি ছড়িয়েছিল রানিনগরে। তৃণমূল এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তার পরেই পুলিশ বেছে বেছে বিরোধীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে বলে অভিযোগ। গ্রেফতার করা হয় কুদ্দুস-সহ ৩১ বিরোধী নেতা-কর্মীকে।