Pegasus

Pegasus Scandal: পেগাসাস স্পাইওয়্যার হানা কলকাতার সাংবাদিকের ফোনেও! বললেন, ‘ভয় নয় জয়’

গত সপ্তাহে সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্যারিসের এক ল্যাবে যোগ করা হয় ফোন। তারাই পরীক্ষা করে জানায়, সাংবাদিক আবদির ওই ফোনে আড়ি পাতা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২১ ১৭:৫২
Share:

সাংবাদিক এসএনএম আবদি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

দেশের যে ৪০ জন সাংবাদিকের ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ উঠেছে, তার মধ্যে রয়েছেন কলকাতারও এক জন। প্রবীণ সাংবাদিক এসএনএম আবদি ২০১৮ সাল থেকে একটি আইফোন-৬ ব্যবহার করছেন। গত সপ্তাহেই তিনি জানতে পারেন, সেটি ইজরায়েলি পেগাসাসের কবলে পড়েছে।

Advertisement

২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের কিছু দিন আগে থেকে দেশের অনেক নেতা, মন্ত্রী, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকদের ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের আঙুল মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। ইজরায়েলি পেগাসাস স্পাইওয়্যার দিয়ে এই যান্ত্রিক নজরদারি চালানোর অভিযোগ করেছে ‘তদন্তকারী’ ১৬টি সংবাদমাধ্যম। ভারতে ৪০ জন সাংবাদিকের ফোনে পেগাসাস স্পাইওয়্যার ঢোকার প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি।

কলকাতার নিউ আলিপুরের বাসিন্দা আবদি আনন্দবাজার অনলাইনকে বললেন, ‘‘তদন্তকারীরা গত সপ্তাহে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে নিউ আলিপুরের ফ্ল্যাটে আসেন। সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্যারিসের এক ল্যাবে যোগ করা হয় আমার ফোন। তারাই ঘণ্টা দু’য়েক পরীক্ষা করে জানায়, আমার ফোনে আড়ি পাতা হয়েছে।’’

Advertisement

প্রতীকী ছবি

২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে এবং পরে বার পাঁচেক তাঁর ফোনে আড়ি পাতার প্রমাণ মিলেছে বলে তদন্তকারীরা আবদিকে জানিয়েছেন। ওই বছর জুন মাসের যে সময়ে আড়ি পাতা হয়েছিল বলে অভিযোগ, সেই সময় তিনি বিশ্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে একটি সেমিনারে যোগ দিতে স্লোভাকিয়ায় ছিলেন। অক্টোবরেও তাঁর ফোনে আড়ি পাতা হয়। সে সময় তিনি ছিলেন আমেরিকায়।

আবদি অবশ্য ব্যক্তিগত ভাবে এই আড়ি পাতার খবরে আতঙ্কিত নন। তাঁর কথায়, “ভয় পাইনি। এটাকে আমার জয় হিসেবেই দেখছি।” এ নিয়ে আইনি অভিযোগ জানানোর কথাও আপাতত তিনি ভাবছেন না। বললেন, ‘‘আমি কোনও অপরাধও করিনি, তাই লুকোনোরও কিছু নেই। কোনও শক্তির ভয়েই আমি আমার প্রিয় ফোন বা নম্বর বদল করব না।’’

কিন্তু কেন তাঁর ফোনে আড়ি পাতা হল? দেশি, বিদেশি অনেক সংবাদমাধ্যমে কাজ করা আবদি বললেন, ‘‘সরকারের বিভিন্ন কাজের খামতি নিয়ে খবর করেছি। বর্তমান সরকারেরও একাধিক কাজের সমালোচনা করেছি এটা ঠিকই, কিন্তু আমার ফোনের উপর নজরদারির সঠিক কারণ বলতে পারব না।’’ একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “এমনটা হতে পারে যে সাংবাদিকরা কাদের কাছ থেকে খবর সংগ্রহ করছেন, ফোনে আড়ি পেতে সেটাই জানার চেষ্টা করে হচ্ছে। যাঁরা সাংবাদিকদের খবর বা তথ্য দিচ্ছেন, ভয় দেখিয়ে তাঁদের মুখ বন্ধের চেষ্টা করা হতে পারে।” কে বা কারা এই পেগাসাস ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছেন, বা শেষ পর্যন্ত কার কাছে এই সব তথ্য যাচ্ছে, তা জানা জরুরি বলে মনে করেন তিনি।

প্রতীকী ছবি

আবদির ফোনে পেগাসাস-এর অস্তিত্ব মেলার পর তাঁকে ফোন ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন তদন্তকারীরা।

  • হোয়াটসঅ্যাপের বদলে আরও নিরাপদ কোনও অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার।
  • হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলার পর দ্রুত তা মুছে ফেলা।
  • দরকারি বা গোপন কথা বলার জন্য ‘সিকিওর লিঙ্ক’ ব্যবহার।
  • যেহেতু পেগাসাস-এর মাধ্যমে দূর থেকেই ফোনের মাইক্রোফোন চালু করে কথা শোনা যায়, তাই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে ফোন সঙ্গে না রাখা।
  • গোপন কোনও তথ্য আদানপ্রদানের জন্য সম্ভব হলে ফোন ব্যবহার না করে সামনাসামনি কথা বলাই ভাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement