প্রতীকী ছবি।
অস্ত্রোপচারের পরে সংক্রমণজনিত কারণে রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালকে ৯১ হাজার টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিল স্বাস্থ্য কমিশন।
ঝর্না বসু নামে ৬৮ বছরের বৃদ্ধা পেটে ব্যথা নিয়ে গত ১৪ অগস্ট সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। বৃদ্ধার পেটের মধ্যে থাকা টিউমার অস্ত্রোপচার করে বার করেন চিকিৎসকেরা। অস্ত্রোপচারের পরে কিছু দিন চিকিৎসাধীন থাকার পরে বৃদ্ধা বাড়ি চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু চলতি বছরের ২ সেপ্টেম্বর শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে ফের ওই হাসপাতালে যান রোগীর পরিজনেরা। চিকিৎসকেরা জানান, অস্ত্রোপচারের জায়গায় সংক্রমণ হয়ে গিয়েছে। দ্রুত ফের অস্ত্রোপচার করতে হবে। সংক্রমণের জেরে মৃত্যু হয় বৃদ্ধার। পরিজনদের অভিযোগ, প্রথম বার অস্ত্রোপচারের সময় গাফিলতির কারণেই বৃদ্ধার
মৃত্যু হয়েছে। প্রথম দফায় অস্ত্রোপচারের জন্য খরচ হয়েছিল ২ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা। দ্বিতীয় দফায় খরচ হয় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। কমিশনের বক্তব্য, দ্বিতীয় বারের অস্ত্রোপচারের দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নেওয়া উচিত ছিল। স্বাস্থ্যবিমার মাধ্যমে বিল মেটানোর পরে প্রথম দফায় ৪১ হাজার এবং দ্বিতীয় দফায় ৫০ হাজার টাকা রোগীর পরিজনদের দিতে হয়েছে। সেই টাকা বেসরকারি হাসপাতালকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বলেছে কমিশন।
এ দিন আরও দু’টি গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি ছিল। আমতার একটি ঘটনায় অভিযোগের কাঠগড়ায় রয়েছেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। রোগীর পরিজনদের অভিযোগ, সেখানে বৃদ্ধ রোগীকে করোনা সন্দেহভাজন হিসেবে ভর্তি করা হয়েছিল। নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এলে রোগীকে সাধারণ ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু তিন দিন ধরে রোগী কেমন আছেন জানতে না পারায় চতুর্থ দিনে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরিজনদের বচসা শুরু হয়। ওই দিনই বৃদ্ধ মারা যান। পরিজনদের বক্তব্য, দুপুর আড়াইটের সময় বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে বলে ডেথ সার্টিফিকেটে লেখা ছিল। সেই সময় তাঁরা হাসপাতাল চত্বরে উপস্থিত থাকলেও বিকেল চারটের সময় মৃত্যুর কথা জানানো হয়। সেই ঘটনাকে ঘিরে নার্সিংহোমে ভাঙচুরের অভিযোগ রোগীর পরিজনদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছিলেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। কমিশন মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য বলেছে।
আর একটি ঘটনা দুর্গাপুরের। সেখানে বেসরকারি হাসপাতালে গত ডিসেম্বরে পেটের রোগের চিকিৎসা করানোর জন্য গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর হার্টের চিকিৎসা শুরু করে দেন বলে অভিযোগ। আপত্তি জানালেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তা থেকে বিরত থাকেননি। এক সময়ে রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে পরিজনেরা হায়দরাবাদে নিয়ে যান। রোগীর গলব্লাডারে স্টোন হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসার পরে আপাতত ওই রোগী ভাল আছেন। দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে স্বাস্থ্য কমিশন।