ফাইল চিত্র।
‘ধৈর্য, পবিত্রতা, অধ্যবসায়’— যে কোনও সাফল্যের পিছনে রয়েছে এই তিনটি শব্দ। আর পড়ুয়ারা যাতে সেই সাফল্যের শিখরে পৌঁছতে পারে, তার জন্য স্বামী বিবেকানন্দের এই উক্তির উপরেই জোর দেন রামকৃষ্ণ মিশনের স্কুলের সন্ন্যাসী থেকে শিক্ষকেরা।
আর তাতেই এ বারও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম ছয়ের মধ্যে রয়েছেন রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালিত চারটি স্কুলের ১৪ জন ছাত্র। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে পাওয়া তালিকা অনুযায়ী, নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয় (আবাসিক), থেকে ৪৯৮ নম্বর পেয়েছেন ১ জন, ৪৯৭ পেয়েছেন ১ জন, ৪৯৫ পেয়েছেন ১ জন, ৪৯৪ পেয়েছেন ২ জন । রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন বয়েজ হোম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৪৯৬ পেয়েছেন ৬ জন। আবার পশ্চিম মেদিনীপুরের রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাভবন থেকে ১ জন ৪৯৮ ও আর এক জন ৪৯৪ নম্বর পেয়েছেন। সরিষা রামকৃষ্ণ মিশন শিক্ষামন্দির থেকে এক জন পেয়েছেন ৪৯৪।
প্রতি বছর সাফল্যের ধারাবাহিকতা কী ভাবে বজায় থাকে? রহড়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বামী মুরলীধরানন্দ বলেন, ‘‘ছাত্রদের কাছে আমরা সিঁড়ির এক-একটি ধাপ। আমাদের উৎসাহে তারা নিজেদের অধ্যবসায় দিয়ে যাতে সাফল্যের শিখরে পৌঁছতে পারে, সে দিকেই জোর দেওয়া হয়।’’ আবার হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়াকে দূরে সরিয়ে রেখে নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে নিজেকে তৈরি করাই সাফল্যের মূল কারণ বলে মনে করেন নরেন্দ্রপুরের প্রধান শিক্ষক ব্রহ্মচারী তুরীয়চৈতন্য। নরেন্দ্রপুরের ছাত্র শিলিগুড়ির বাসিন্দা নীলাব্জ দাসের কথায়, ‘‘আবাসিক থাকার ফলে সহপাঠীদের সঙ্গে আলোচনার সুযোগটা অনেক বেশি ছিল। সেটাও প্রত্যেককে ভাল রেজাল্ট করতে সাহায্য করেছে।’’ দিনে ৬-৭ ঘণ্টা পড়াশোনা করলেও স্কুলের শিক্ষক ও সন্ন্যাসীদের সহযোগিতা ছাড়া ৯৯.২০ শতাংশ নম্বর পাওয়া সম্ভব ছিল না বলেই জানাচ্ছেন রহড়ার পড়ুয়া সমাপন কর।
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের শিক্ষা আন্দোলনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে দীর্ঘ দিন জড়িত ছিলেন সঙ্ঘের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুবীরানন্দ। তাঁর কথায়, ‘‘ছাত্রদের প্রচেষ্টা, সংকল্প এবং সন্ন্যাসী ও শিক্ষকদের শুভেচ্ছা আর সর্বোপরি মা সারদার আর্শীবাদেই এই সাফল্য ধরে রেখেছে পড়ুয়ারা।’’ তিনি জানান, দেওঘর, কেরলের কালাদিতে রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালিত স্কুলের পড়ুয়ারাও এ বছর মাধ্যমিকে স্থান অর্জন করেছেন।