Partha Chatterjee

পাঠ-প্রস্তুতির ছুটি বাতিল হোক: পার্থ

প্রস্তুতি-ছুটি বন্ধ করতে উচ্চশিক্ষা দফতর আগেও উদ্যোগী হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৫:০৫
Share:

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র

ক্লাসে পড়ানোর জন্য তৈরি হতে দীর্ঘদিন ধরে এক ধরনের ছুটি পেয়ে আসছেন বঙ্গের কলেজ-শিক্ষকেরা। সেই ‘প্রিপারেটরি লিভ’ বা প্রস্তুতি-ছুটি এ বার বাতিল করে দিতে চাইছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

সল্টলেকে পূর্বাঞ্চলীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কলেজের অধ্যক্ষদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি জানান, চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেম (সিবিসিএস) বা পছন্দসই মিশ্র পাঠ কতটা কার্যকর হচ্ছে, সেই বিষয়ে তাঁর সংশয় আছে। সিবিসিএস সিস্টেমে সিমেস্টারে ক্লাস কম হওয়ায় পাঠ্যক্রম শেষ করা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন অধ্যক্ষেরা। দক্ষিণবঙ্গের প্রতিটি জেলার এক জন করে অধ্যক্ষ সিবিসিএস নিয়ে সমস্যার কথা তুলে ধরেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘সিবিসিএস সিস্টেমে ক্লাসের সংখ্যা বাড়ানোর প্রয়োজন হলে বিধি বদলে প্রিপারেটরি ডে বাতিল করে সপ্তাহে ছ’দিন ক্লাস নিতে হবে। সিবিসিএসে কী কী অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে, রিপোর্টে লিখে জানান।’’

প্রস্তুতি-ছুটি বন্ধ করতে উচ্চশিক্ষা দফতর আগেও উদ্যোগী হয়েছিল। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে কলেজ-শিক্ষকদের প্রস্তুতি-ছুটি বন্ধের নির্দেশ দেওয়ার পরেই জোরদার বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। ওয়েবকুটা এবং শাসক দলের শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা বিষয়টির বিরোধিতা করেছিল। শেষ পর্যন্ত সেই নির্দেশ আর কার্যকর হয়নি। আবার বিষয়টি বাস্তবায়িত করতে উদ্যোগী হলেন শিক্ষামন্ত্রী। রবিবার ছাড়াও পড়াশোনার জন্য শিক্ষকেরা সপ্তাহে এক দিন ছুটি পান। সেটা সোম থেকে শুক্রবারের মধ্যে যে-কোনও দিন নিতে পারেন তাঁরা। কোনও কোনও অধ্যক্ষ প্রস্তুতি-ছুটি বাতিল না-করে শনিবার ক্লাস চালু রাখা যায় কি না, সেই প্রস্তাব দেন।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘কলেজগুলো স্বশাসিত হলেও কোনও নিয়োগ হলে আমাদের জানিয়ে করবেন। নিয়োগে স্বচ্ছতা আনা দরকার। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দিলে হবে না। শিক্ষা দফতর কিন্তু চোখ বন্ধ করে নেই।’’ কলেজ যে-অতিথি শিক্ষক নিয়োগ করে, তাতেও রাশ টানতে বলেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘আপনারা অতিথি শিক্ষক নিয়োগ করবেন, তার পরে সেই শিক্ষকেরা দাবিদাওয়া নিয়ে রাস্তায় বসবেন, এটা হতে পারে না।’’

শিক্ষামন্ত্রী ‘চাইল্ড কেয়ার লিভ’ বা সন্তান লালনের ছুটি নিয়েও বৈঠকে সরব হন। বলেন, ‘‘একটা কলেজে একসঙ্গে অনেক শিক্ষক মিলে চাইল্ড কেয়ার লিভ নিলে পড়াবে কে? তাই এই ছুটির বিষয়ে ‘রোস্টার’ বা তালিকা বছরের প্রথমেই তৈরি করে ফেলুন।’’

পঠনপাঠনের সঙ্গে কোনও আপস চলবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। ‘‘উপাচার্যদের অবসরের বয়স ৭০ করা হয়েছে। শিক্ষকেরা বিদেশে বেড়ানোর সুযোগ পাচ্ছেন। ছুটি পাচ্ছেন অনেক। পড়ানোর সঙ্গে কোনও আপস করলে চলবে না। আপনাদের শুভবুদ্ধির উদয় হোক,’’ বৈঠকে বলেন পার্থবাবু।

কলেজগুলির পরিকাঠামো নিয়ে কিছু প্রশ্ন তোলেন শিক্ষামন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, বেশ কিছু কলেজে ছাত্র অনেক কম। আবার কিছু কলেজে ছাত্র উপচে পড়ছে। শুধু কিছু ভাল কলেজে ভিড় বেশি হবে কেন? ‘‘কলেজকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হতে হবে। কলেজে রং করার পরে কেউ স্লোগান লিখে চলে গেল, এটা যাতে না-হয়, সেটাও দেখতে হবে,’’ বলেন শিক্ষামন্ত্রী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement