Partha Chatterjee

উধাও ফিটন গাড়ি, কেক-পুষ্পস্তবক, নিঃসঙ্গ পার্থ জেলেই কাটালেন জন্মদিন

শেষ শুনানিতে আদালতের কাছে জামিনের আবেদন করেননি এসএসসি মামলায় গ্রেফতার রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। এর আগে জামিন চেয়ে তাঁর কান্নাকাটি কাজে লাগেনি, শারীরিক অসুস্থতার দোহাই দিয়েও লাভ হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২২ ১৫:৩৫
Share:

প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে বৃহস্পতিবার জন্মদিনে নিঃসঙ্গই কাটিয়েছেন পার্থ।

অন্য বছরগুলিতে নাকতলার বাড়িতে সকাল থেকেই ভিড় জমাতে শুরু করতেন কর্মী-সমর্থক-অনুগামী-শুভানুধ্যায়ীরা। গত বছর মাতৃবিয়োগের কারণে নিজে থেকে সবাইকে বাড়িতে জন্মদিনের আয়োজন করতে বারণ করেছিলেন। তাতেও শুভেচ্ছাবার্তায় ভেসে গিয়েছিলেন তৎকালীন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী। কিন্তু বেহালার পার্টি অফিসে ধুমধাম করে পার্থ কেক কেটেছিলেন কর্মী-সমর্থকদের উদ্যোগেই। সেই অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন পার্থ-বান্ধবী অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়ও। বর্তমানে পার্থর সঙ্গে তিনিও জেলে। ষষ্ঠীতে মিনিট দশেকের জন্য প্রেসিডেন্সি জেলের পুজো দেখতে এসেছিলেন পার্থ। কয়েক জন বন্দির অনুরোধে ঢাকও বাজিয়েছিলেন তিনি। তবে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে বৃহস্পতিবার জন্মদিনে নিঃসঙ্গই কাটিয়েছেন পার্থ।

Advertisement

কারণ, এ বারের জন্মদিনে যে বিধিবাম। ২২ জুলাই রাতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তাই এ বার জন্মদিন জেলেই কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন তিনি। বুধবার আলিপুর কোর্টের মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের (সিজেএম) আদালতে আবার পার্থের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জেল-কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট তলব করেছেন‌ বিচারক। শেষ শুনানিতে আদালতের কাছে জামিনের আবেদন করেননি এসএসসি মামলায় গ্রেফতার রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। এর আগে জামিন চেয়ে তাঁর কান্নাকাটি কাজে লাগেনি, শারীরিক অসুস্থতার দোহাই দিয়েও লাভ হয়নি। তাই জন্মদিনের ঠিক এক দিন আগে আদালতে জামিনের আবেদন করেননি তাঁর আইনজীবী।

মা শিবানী চট্টোপাধ্যায় ও স্ত্রী বাবলি চট্টোপাধ্যায়ের জীবিত থাকাকালীন বাড়িতেই পায়েস খেয়ে জন্মদিনের সূচনা করতেন পার্থ। ধান-দূর্বা দিয়ে মা শিবানী আশীর্বাদ করতেন পুত্রকে। কিন্তু ২০১৭ সালে স্ত্রী ও ২০২১ সালে মায়ের প্রয়াণের পর বাড়ির জন্মদিন পালনে বদল এসেছিল। ২০১১ সাল থেকে পার্থর নাকতলার বাড়ি থেকে বেহালা পশ্চিমের ম্যান্টনের অফিস জুড়ে থাকত কর্মী-সমর্থক-অনুগামী-শুভানুধ্যায়ীদের ভিড়। কোনও সময় শারদোৎসবের তিথিতে তাঁর জন্মদিন পড়লে, সেই সময় নাকতলা উদয়ন সঙ্ঘের পুজো উদ্যোক্তারা তা পালন করতেন। কখনও নতুন পাঞ্জাবি পরে পুজোর মঞ্চে হাজির হতেন জন্মদিন পালনে, কখনও তাঁর জন্য আনা হত ফিটন গাড়ি। কাটা হত কেকও। সেই দিন বাইরে কোথাও থেকে পার্থ বাড়ি ফিরলে তাঁর গাড়ি উপচে পড়ত মিষ্টি, কেক ও পুষ্পস্তবকে।

Advertisement

এ বছর ভাগ্যদেবী সঙ্গ দেননি পার্থকে। গ্রেফতারির পর মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে, হারিয়েছেন দলের মহাসচিব পদ। দল থেকেও সাসপেন্ড হয়েছেন তিনি। তাই দলের সঙ্গে সে অর্থে কোনও ‘যোগাযোগ’ নেই তাঁর। সম্প্রতি আলিপুর কোর্টে বেহালা পশ্চিমের এক আইনজীবী তৃণমূল নেতাকে দেখে কেঁদেই ফেলেছিলেন পার্থ। বলেছিলেন, ‘‘তোরা আমাকে জেল থেকে বার করার চেষ্টা কর।’’ সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ১৯৫২ সালের ৬ অক্টোবর জন্ম পার্থর। বয়সের নিরিখে দেখতে হলে এ বছর ৭০ পূর্ণ করে ৭১ বছরে পা দিলেন তিনি। কিন্তু জামিন পেয়ে জেলের বাইরে তিনি কবে পা রাখবেন, তা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন থাকছেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement