রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে নিয়োগ ও ভর্তি দুর্নীতিতে বিপুল আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে পৃথক পৃথক মামলায় তাঁরা আছেন জেল হেফাজতে। তাঁদেরই এক জনকে জেরার সূত্রে জানা গিয়েছে, ছাড়পত্র দিতে এবং অনলাইনে পড়ুয়া ভর্তি করতে বেসরকারি বিএড ও ডিইএলএড কলেজ থেকে যেমন কোটি কোটি টাকা নেওয়া হয়েছিল, একই ভাবে টাকা নেওয়া হয় বেসরকারি আইন এবং ফার্মাসি কলেজের ক্ষেত্রেও।
দু’টি ক্ষেত্রেই ইডি বা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের অভিযোগের তির রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং প্রাথমিক শিক্ষা পরিষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের দিকে। প্রাথমিক টেট দুর্নীতিতে ইডি-র মামলায় মানিক এখন জেলে আছেন। তদন্তকারীদের দাবি, তাঁকে জেরা করেই এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে এবং মানিকের বয়ান অনুযায়ী তাতে পার্থও জড়িত।
এসএসসি বা স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত পার্থ এবং তাঁর বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ইডি-র মামলায় বুধবার বিচার ভবনের সিবিআই (পিএমএলএ) বিশেষ আদালতে ভার্চুয়াল শুনানি হয়। তখনই বেসরকারি আইন ও ফার্মাসি কলেজ থেকে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনেন ইডি-র কৌঁসুলিরা। ইডি-র দাবি, এখনও পর্যন্ত পার্থ ও অর্পিতা এবং তাঁদের আত্মীয়দের প্রায় ১০৩ কোটি টাকার হদিস পাওয়া গিয়েছে। বিচারক শুভেন্দু সাহা শুনানি শেষে পার্থ ও অর্পিতাকে ফের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
পার্থের আইনজীবী সেলিম রহমান এ দিন প্রাক্তন মন্ত্রীর জামিনের জন্য কোনও আবেদন করেননি। তিনি বলেন, ‘‘তদন্তে কোনও অগ্রগতি নেই। নতুন কোনও তথ্য উঠে আসেনি। ইডি সম্প্রতি মামলার যে-নথি জমা দিয়েছে, তার অধিকাংশ জায়গা অস্পষ্ট।’’ কার্যত একই অভিযোগ করেন অর্পিতার আইনজীবী। ইডি-র আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র বলেন, ‘‘নথির কোন কোন জায়গা অস্পষ্ট, তা জানালে সেই সব অংশ ফের তুলে দেওয়া হবে।’’
পার্থ ও অর্পিতার বিরুদ্ধে মামলায় ইতিমধ্যে চার্জশিট জমা দিয়েছে ইডি। সম্প্রতি চার্জশিটের সঙ্গে প্রায় ১৪ হাজার নথি জমা দিয়েছিল তদন্তকারী সংস্থা। সেই নথি চেয়ে পার্থের কৌঁসুলিরা যে-আর্জি জানিয়েছিলেন, আদালত তা মঞ্জুর করেছে।