পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বইয়ে নেই জগদীপ ধনখড়ের উল্লেখ।
এ বার বইমেলায় তিনটি বই প্রকাশিত হবে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। যার একটির বিষয় তাঁর রাজনৈতিক জীবনে কাছ থেকে দেখা বাংলার কয়েক জন রাজ্যপাল। বইটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘রাজভবনের অন্দরমহলে’।
২০০৬ সালে বিরোধী দলনেতা হন পার্থ। সেই সময় বাংলার রাজ্যপাল ছিলেন মহাত্মা গাঁধীর পৌত্র গোপালকৃষ্ণ গাঁধী। সেই সময়তেই সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম আন্দোলনকে ঘিরে উত্তাল হয়েছিল বাংলার রাজনীতি। আর সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই বিরোধী দলনেতা-রাজ্যপালের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সেই সম্পর্কের কথা যেমন উঠে এসেছে বেহালা পশ্চিমের পাঁচবারের বিধায়কের বইতে। তেমনই থাকছে গোপালকৃষ্ণের উত্তরসূরি এম কে নারায়ণ ও কেশরীনাথ ত্রিপাঠির কথাও।
কিন্তু পার্থর ‘রাজভবনের অন্দরমহলে’ বইটি থেকে বাদ পড়েছেন বর্তমান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পর ৩০ জুলাই পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যপালের দায়িত্বে আসেন তিনি। সেই থেকেই তাঁর সঙ্গে নানা কারণে মতভেদ হয়েছে রাজ্য সরকারের। শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন শিক্ষাক্ষেত্রের নানা বিষয়ে মতান্তর হয়েছে পার্থ-ধনখড়ের। বর্তমানে রাজ্য সরকারের সঙ্গেও রাজভবনের সখ্য নেই। সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও নানা সময়ে বাদানুবাদ হয়েছে রাজ্যপালের। তাই পার্থ ঘনিষ্ঠদের মতে, নিজের বই নিয়ে অহেতুক বিতর্ক চাননি তিনি। তাই ইচ্ছাকৃত ভাবেই রাজভবনে ধনখড় জমানাকে বাদ রেখেছেন শিল্পমন্ত্রী।
তবে নিজের বই প্রসঙ্গে এখনই প্রকাশ্যে কোনও মতামত জানাতে চান না পার্থ। বরং নিজের অন্য দু’টি বই নিয়ে কথা বলতেই আগ্রহী তৃণমূল সর্বভারতীয় সহসভাপতি। ‘রাজভবনের অন্দরমহলে’ ছাড়াও যে দুটি বই প্রকাশিত হবে তার একটি ইংরেজিতে। নাম ‘স্ট্রাগল পিরিয়ড ইউথ আওয়ার লিডার মমতা ব্যানার্জি’। যেখানে তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে তাঁর কাটানো সংগ্রামের মূহূর্তের কথা লেখা হয়েছে।
পার্থর লেখা তৃতীয় বইটির নাম ‘নয় নেতার নয় কাহন’। বইটিতে তাঁর রাজনৈতিক জীবনে দেখা ন’জন নেতার কথা উঠে আসবে বলেই জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী। বইটিতে তৃণমূল নেত্রী মমতা ছাড়াও প্রয়াত নেতা সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়, প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সোমেন মিত্র, পঙ্কজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা থাকছে। দমদমের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়ের সঙ্গে তাঁর অভিজ্ঞতাও বইয়ে জানিয়েছেন পার্থ। সঙ্গে প্রয়াত দুই বামপন্থী নেতার কথাও নিজের বইতে বিস্তারিত উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁরা হলেন প্রাক্তন স্পিকার হাসিম আব্দুল হালিম ও শ্রমিক নেতা মহম্মদ ইসমাইল। শ্রমিক নেতা হিসেবে বাংলার রাজনীতিতে ইসমাইলের ভুমিকার কথা নিজের কলমে তুলে ধরেছেন পার্থ। তেমনই বিধানসভায় ১০ বছর স্পিকার হালিমের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাও জানিয়েছেন সেখানে।