প্যানিক বাটন নিয়ে সমস্যায় পরিবহণ দফতর। —প্রতীকী চিত্র।
ভেহিকল লোকেশন ট্র্যাকিং ডিভাইস (ভিএলটিডি) চালু করে বেজায় সমস্যায় পড়েছে পরিবহণ দফতর। সেই সমস্যার প্রভাব পড়ছে পুলিশ প্রশাসনেও। দিল্লিতে নির্ভয়াকাণ্ডের প্রেক্ষিতে নারী এবং শিশু তথা যাত্রী সুরক্ষার স্বার্থে গণপরিবহণে ভিএলটিডি বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তার ভিত্তিতে দেশের সব রাজ্যের সরকারি এবং বেসরকারি বাস, মিনিবাস, ট্যাক্সি, অ্যাপ ক্যাবে এই প্রযুক্তি বসানো বাধ্যতামূলক করে পরিবহণ দফতর। এই ভিএলটিডি যন্ত্রের একটি অংশ হল প্যানিক বাটন, যা গণপরিবহণ পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে যাত্রীদের হাতের কাছে রাখা হয়। অপ্রীতিকর কোনও ঘটনা ঘটলে যাত্রীরা যাতে প্যানিক বাটন টিপলে পরিবহণ দফতরের ‘কম্যান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার’-এর বড় পর্দায় ওই গাড়ির অবস্থান জানা যাবে। এবং পরিবহণ দফতর মারফত সেই বার্তা দ্রুত পুলিশের ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স সার্পোট সিস্টেম’ (ইআরএসএস)-এ পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ইআরএসএসে সেই গাড়ির অবস্থান দেখে পুলিশ প্রশাসন পদক্ষেপ করবে। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের মাথায় ছিল যাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতি ঘটছে উল্টো। সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে বিব্রত হতে হচ্ছে পরিবহণ দফতরকে।
যাত্রীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে গিয়ে নতুন সমস্যা তৈরি হয়েছে প্রশাসনের অন্দরেই, তা এক বাক্যে মেনে নিচ্ছে পরিবহণ দফতর। যাত্রীরা অনেকেই মজার ছলে কিংবা প্যানিক বাটনের কার্যকরিতা পরীক্ষা করতে কৌতুহলবশত যন্ত্রে চাপ দিচ্ছেন। সেই বাটনে চাপ দেওয়ার ফলে পরিবহণ দফতর এবং পুলিশ প্রশাসন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে গেলে দেখা যাচ্ছে, নিরাপত্তাজনিত কোনও সমস্যাই হয়নি। গত কয়েক মাসে গড়ে প্রতি দিন ৩০০-৪০০ এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। যা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে পরিবহণ দফতর। ইতিমধ্যে পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বিষয়টি নিয়ে একাধিক বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে মন্ত্রী জেনেছেন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই যাত্রীরা প্যানিক বাটনের অপব্যবহার করেছেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, আপত্তিকর বা নিরাপত্তাজনিত সমস্যার কিছুই ঘটেনি। তাই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত পরিবহণ দফতর। এই পরিস্থিতিতে প্যানিক বাটনের অপব্যবহার রুখতে পরিবহণ দফতর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগামী দিনে যে গাড়ি থেকে দিনে একাধিক বার ভুয়ো অ্যালার্ট আসবে, তার মালিককেই জরিমানা করা হবে। এই পথে হেঁটেই আপাতত সমস্যার সমাধান করতে চাইছে পরিবহণ দফতর।