আবাস যোজনায় নজরদারিতে কেন্দ্রীয় দলের আগেই জেলায় যাচ্ছেন মমতার মন্ত্রী। ফাইল চিত্র।
বার বার কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল এসে আবাস প্লাস যোজনায় নজরদারি করে যাচ্ছে। তা সত্ত্বেও এই আবাস যোজনার প্রকল্পে বিভিন্ন জেলার দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। তৃণমূলের শুরু করা ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ নিয়ে ‘দিদির দূত’ হিসেবে নীচু তলায় গিয়ে ক্ষোভের সম্মুখীন হচ্ছেন শাসকদলের নেতারা। সে ক্ষেত্রে আবাস প্লাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগও শুনতে হয়েছে তাঁদের। তাই এ বার নীচু তলা থেকে উঠে আসা এই ধরনের অভিযোগের সারবত্তা জানতে তিন জেলায় সফরে গেলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। নিজের এই সফর প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে কিছুই জানাতে চাননি তিনি। তবে পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে খবর, আগামী এক সপ্তাহ জুড়ে রাজ্যের তিনটি জেলায় গ্রামীণ উন্নয়নের কাজ খতিয়ে দেখার পাশাপাশি, আবাস প্লাস যোজনায় ওঠা অভিযোগ নিয়েও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের পাশাপাশি, বীরভূম জেলা সফরে যাবেন মন্ত্রী।
এই সফরে আবাস দুর্নীতি নিয়ে তিনি যেমন জেলাশাসক-সহ জেলার শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলবেন। তেমনই, কথা বলবেন ব্লক পর্যায়ের আধিকারিকদের সঙ্গেও। মঙ্গলে শুরু হওয়া পঞ্চায়েত মন্ত্রীর এই সফর চলবে রবিবার পর্যন্ত। তার পরে সোমবার আবার কলকাতায় ফিরে পঞ্চায়েত দফতরের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। ইতিমধ্যেই আবাস প্লাস যোজনায় দুর্নীতির ঘটনায় নজরদারি করে গিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিদল। তাতেও ক্ষোভ-বিক্ষোভ কমেনি বাংলার গ্রামীণ জনতার।
গোটা দেশের বিচারে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্লাসের আওতায় ২.৯৫ কোটি পাকা বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিমধ্যেই প্রায় ২ কোটি পাকা বাড়ি তৈরি হয়েছে। কিন্তু এখনও লক্ষ্যমাত্রা পূরণে অনেক কাজ বাকি। সেই কারণেই ২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা গ্রামীণ ক্ষেত্রে চালু রাখার ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্র। সেই পর্যায়ে ৮ হাজার ২০০ কোটি টাকা পশ্চিমবঙ্গকে বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র। আর তাতে কেন্দ্র-রাজ্য সমন্বয়ে ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার বাড়ি নির্মাণ হবে। কিন্তু সেই আবাস নির্মাণ নিয়েই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তি বেড়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের। কারণ আগামী মে মাসে হতে পারে পঞ্চায়েত ভোট। পঞ্চায়েত ভোটের আগে গ্রামীণ আবাস নির্মাণ প্রকল্পে দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তা হিতে বিপরীত হতে পারে। আর তাই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই মন্ত্রী স্বয়ং সেই সমস্যার সমাধান করতে হাজির হচ্ছেন জেলায় জেলায়।