ভারতীয় সেনায় পাকিস্তানি নাগরিক কর্মরত বলে অভিযোগ। এই মামলায় সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দিল হাই কোর্ট। —প্রতীকী চিত্র।
ভারতীয় সেনায় পাক নাগরিকদের কাজ করার অভিযোগ সংক্রান্ত মামলায় সিবিআইকে প্রাথমিক অনুসন্ধানের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নির্দেশ, এই মামলায় প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু করে দিক সিবিআই। সিআইডির পাশাপাশি সিবিআইকেও বিষয়টি নিয়ে দেখতে বলল আদালত। দেশের নিরাপত্তায় দেশের সব সংস্থাকে একযোগে কাজ করতে হবে বলে নির্দেশ দিল হাই কোর্ট।
উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরের সেনাছাউনিতে পাকিস্তানের দুই নাগরিক কর্মরত বলে অভিযোগ। তাঁদের নাম জয়কান্ত কুমার এবং প্রদ্যুম্ন কুমার। অভিযোগ, পাকিস্তান থেকে এসে তাঁরা ভারতীয় সেনায় যোগ দিয়েছেন। সরকারি পরীক্ষার মাধ্যমে তাঁদের নিয়োগও হয়েছে। ওই পরীক্ষায় প্রয়োজনীয় নথিপত্র জাল করে চাকরি পেয়েছেন তাঁরা। এই অভিযোগে হাই কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়। এই ঘটনায় আগে পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের যুক্ত থাকার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন বিচারপতি মান্থা।
মঙ্গলবার এই মামলায় বিচারপতি মান্থার মন্তব্য, ‘‘সিআইডি-র প্রাথমিক তদন্তে যা উঠে আসছে তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’’ রাজ্য জানায়, তদন্তে সিআইডি অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে। এই ঘটনার গভীরতা আন্দাজ করা যাচ্ছে না। উত্তরপ্রদেশ, বিহার, অসম-সহ বহু রাজ্যের যোগ পাওয়া যাচ্ছে। আমরা ছাপাখানা চিহ্নিত করতে পেরেছি। যেখানে ডমিসাইল সার্টিফিকেট-সহ জাল নথি ছাপা হয়। বিচারপতি বলেন, ‘‘সেনা, সিবিআই এবং সিআইডি-কে একযোগে কাজ করতে হবে। একটি সংস্থার সঙ্গে অন্য সংস্থার যেন সংঘাত না হয়।’’ আদালত জানায়, সিআইডির সংগ্রহ করা তথ্য সেনাকে দিতে হবে। সেনা তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনে রিপোর্ট দিতে পারবে। আগামী শুনানিতে সিবিআই এবং সিআইডি তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট দেবে। আগামী ২৬ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
গত ৬ জুন হাই কোর্টে এই সংক্রান্ত মামলাটি দায়ের করেছেন হুগলির বাসিন্দা বিষ্ণু চৌধুরী। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকারের স্টাফ সিলেকশন কমিশনের (এসএসসি জিডি) পরীক্ষার মাধ্যমেই একাধিক পাকিস্তানি নাগরিক ভারতীয় সেনার বিভিন্ন পদে চাকরি পাচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ব্যারাকপুরে কর্মরত ওই দু’জন। এই নিয়োগের নেপথ্যে সক্রিয় বড়সড় চক্র। যার সঙ্গে যুক্ত আছেন অনেক রাজনৈতিক নেতা, প্রভাবশালী ব্যক্তি, এমনকি পুলিশ এবং স্থানীয় পুরসভাও। এসএসসি জিডি-র পরীক্ষায় বসতে গেলে বাসস্থানের প্রমাণ, জাতির শংসাপত্র, ক্যারেকটার সার্টিফিকেটের মতো একাধিক নথি প্রয়োজন হয়। ওই নথি জাল করে বাইরের লোককে পরীক্ষায় বসার বন্দোবস্ত করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।