মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ছবি পিটআই।
তিনি প্রকাশ্যে ঘোষণা করে দেওয়ার পরেও আমপান-দুর্গতদের তালিকা সব বিডিও দফতরে টাঙানো হয়নি বলে অভিযোগ জানিয়ে এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিল বাম ও কংগ্রেস। ত্রাণ বিলি ঘিরে যে ‘কেলেঙ্কারি’ হয়েছে, তার বিচারবিভাগীয় তদন্তেরও দাবি তুলল দুই বিরোধী দল। রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহের অবশ্য দাবি, আমপান-এর ত্রাণ ও ক্ষতিপূরণ দেওয়ায় যে ‘স্বচ্ছতা’ রয়েছে, তা সাম্প্রতিক কালে বাংলা দেখেনি।
নবান্নে সর্বদল বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা বিডিও দফতরে ৭ দিনের মধ্যে টাঙিয়ে দিতে হবে। কিন্তু ৭ দিন পেরিয়ে গেলেও সেই কাজ সর্বত্র হয়নি বলে বৃহস্পতিবার মুখ্যসচিবকে জানিয়েছিলেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজনবাবু। একই বিষয়ে শুক্রবার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও সুজনবাবু চিঠি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীকে। তাঁদের অভিযোগ, ব্যতিক্রমী ক্ষেত্র ছাড়া যথাসময়ে ওয়েবসাইটে তালিকা প্রকাশ এবং বিডিও দফতরে তালিকা টাঙানো হয়নি। সেই সঙ্গেই তাঁরা লিখেছেন, ‘বেশ কিছু এলাকায় ত্রাণের টাকা চুরি অথবা লুঠ হয়েছে। তাদের নাম, পরিচয়, এমনকি স্বীকারোক্তিও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এটা হিমশৈলেক চূড়ামাত্র। ত্রাণ লুঠের ঘটনা যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তা বড়সড় কেলেঙ্কারির থেকে কম নয়। এই বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের বিচারবিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থা করা জরুরি’।
মুখ্যসচিব অবশ্য এ দিন বলেন, ‘‘সব বিডিও দফতরে তালিকা টাঙানো হয়েছে। আমপান-এর ত্রাণ ও ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে যে স্বচ্ছতা আছে, তা অতীতে বাংলা দেখেনি।’’ কিন্তু এত অভিযোগ এবং গোলমালের যে খবর আসছে? মুখ্যসচিবের বক্তব্য, ‘‘দুর্গত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৫০ লক্ষ, সেখানে অভিযোগ ৪০ হাজার। শতাংশের হিসেবে সেটা তুলনীয় নয়।’’ কার্যক্ষেত্রে তালিকা দেখা যাচ্ছে না বলে যে অভিযোগ, সেই প্রসঙ্গে মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘জেলাশাসকেরা যে রিপোর্ট দিয়েছেন, তার ভিত্তিতেই আমি যা বলার, বলছি।’’
আরও পড়ুন: ‘কারা কারা ভোটে দাঁড়াতে চান, হাত তুলুন’, বৈঠকে দিদির গুগলি
সুজনবাবুর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘প্রশাসন যেখানে তালিকা টাঙানো হয়েছে বলছে, সেখানে বাস্তব ঘটনা তা নয়! লুঠের রাজত্ব চলছে!’’ আর মান্নানের মন্তব্য, ‘‘এর পরে হিসেব চাই, হিসেব দাও দাবি করে আমাদের রাস্তায় নামতে হবে।’’