তৃণমূলপন্থীদের বিজয়োল্লাস (বাঁ দিকে)। বিধাননগর দক্ষিণ থানায় বিরোধী সংগঠন (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।
মেডিক্যাল কাউন্সিলের ভোটে কারচুপির অভিযোগ আগেই উঠেছিল। এ বার সেই ভোট বাতিলের দাবি উঠল। কারচুপি নিয়ে অভিযোগ গড়াল থানায়। রবিবার বিরোধী জয়েন্ট প্লাটফর্ম অব ডক্টরসের পক্ষ থেকে বিধাননগর দক্ষিণ থানায় অভিযোগ দায়ের হল। আদালতে রিট পিটিশনও দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যেই বিজয়োল্লাসে মাতল শাসক শিবির। সবুজ আবির মেখে উদ্যাপন করল চিকিৎসকদের তৃণমূলপন্থী সংগঠন। তাদের দাবি, হেরে যাবে বুঝেই নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে সরে যাচ্ছে।
শনিবার মেডিক্যাল কাউন্সিল ভোটে কারচুপির অভিযোগ তুলে নির্বাচনের গণনা প্রক্রিয়া থেকে সরে গিয়েছে জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টরস, মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টার এবং সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম। আঙুল তুলেছে শাসকপন্থী চিকিৎসক প্যানেলের দিকে। জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টরস রবিবার বিধাননগর থানায় গিয়েছেন অভিযোগ নিয়ে। থানার সামনে স্লোগান দেন সদস্যরা। রিটার্নিং অফিসারের গ্রেফতারির দাবিও তোলেন। রিটার্নিং অফিসারের নামে থানায়ও অভিযোগ করছেন বিরোধী প্যানেল। তাদের আরও অভিযোগ, ব্যালটে কারচুপি হয়েছে। গণনাতেও দেরি করা হচ্ছে। ইচ্ছা করেই থেমে থেমে করা হচ্ছে। ভুয়ো ব্যালটের অভিযোগও করেছেন সদস্যরা।
জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টরস, মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টার এবং সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম আরও অভিযোগ, বহু ব্যালটে একই প্রার্থীর নাম দু’বার ছিল। সেখানে অন্য জন প্রার্থী অর্জুন দাশগুপ্তের নামই ছিল না। তাদের তরফে আরও দাবি করা হয়েছে, একটি গোলাপি ব্যালট ছিল। সেগুলির সঙ্গে আরও কিছু গোলাপি ব্যালট রং মিলছে না। মনে করা হচ্ছে, যেগুলির রং মিলছে না, সেগুলি মূল ব্যালটের ‘ফটোকপি’। ওই ‘ভুয়ো’ ব্যালট বাতিলের দাবি উঠেছে। পাশাপাশি পুরো ভোট প্রক্রিয়া বাতিলের দাবিও উঠেছে।
শুধু অভিযোগের মধ্যেই থেমে নেই। ইতিমধ্যে হাই কোর্টে রিট পিটিশন দিয়েছে জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টরস। সেখানে অভিযোগ জানানো হয়েছে, ব্যালটে যে প্রার্থীর নাম ছিল না, তিনি ভোট পাননি। এই বিষয়টি নজরে আনতেই রিট পিটিশন।
এ দিকে তৃণমূল সমর্থিত প্যানেল ইতিমধ্যে সবুজ আবির খেলে উদ্যাপন শুরু করে দিয়েছে। তৃণমূল সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থী তথা বিধায়ক সুদীপ্ত রায়ের দাবি, বিরোধী প্যানেল হেরে যাবে বুঝেই এ সব করছে। ইতিমধ্যে একটি ক্যাটেগরিতে জয় তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উৎসর্গ করেছেন। সুদীপ্তের কথায়, ‘‘ওঁরা হেরে যাবে বুঝেই নির্বাচনের বাকি প্রক্রিয়া থেকে সরে এসেছে। সাধারণ মানুষের থেকে ওঁরা বিচ্ছিন্ন, সেটা বুঝে গিয়েছে। তারই ফল পেল। জি ক্যাটেগরি (শিক্ষক চিকিৎসক) আমরা জিতেছি। এইচ ক্যাটেগরি (চিকিৎসক)-তেও আমরা অনেক ভোটে এগিয়ে। আমাদের জয় হবে নিশ্চিত। এই জয় আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উৎসর্গ করছি।’’
গত ১৯ অক্টোবর ভোটের গণনা শুরু হয়। প্রথমে ‘জি’ ক্যাটেগরির গণনা হয়। ওই দিন তা শেষ হওয়ার পর গভীর রাত থেকে ‘এইচ’ ক্যাটেগরি, অর্থাৎ রাজ্যের সমস্ত রেজিস্টার্ড চিকিৎসকদের ব্যালট গোনা শুরু হয়। ওই ক্যাটেগরিতে ২৬ হাজার ৭০০ মতো ভোট পড়েছে। শুক্রবার তৃতীয় দিন বেলা ১২টা থেকে গণনা শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টায় শেষ হয়। তখনও পর্যন্ত ৫০ শতাংশ গণনা হয়েছিল। শনিবারের পর রবিবারও গড়ায় গণনা।