West Bengal Medical Council

কারচুপির জন্যই কি ইচ্ছাকৃত দেরি, গণনা ঘিরে অভিযোগে বাড়ছে উত্তাপ

বিরোধীদের অভিযোগ, টানা গণনা হচ্ছে না। ১৭-১৮ ঘণ্টার বিরতি থাকছে। যার মাধ্যমে ব্যালটে কারচুপির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে শাসকপন্থী চিকিৎসক প্যানেলকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২২ ০৬:৫০
Share:

রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। ফাইল চিত্র।

তিন দিন পরেও রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের নির্বাচনের ভোট গণনা শেষ হয়নি। দু’টি ক্যাটেগরি মিলিয়ে প্রায় ২৮ হাজার ব্যালট গুনতে কেন এত সময় লাগছে, এখন সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে। বিরোধীদের অভিযোগ, টানা গণনা হচ্ছে না। ১৭-১৮ ঘণ্টার বিরতি থাকছে। যার মাধ্যমে ব্যালটে কারচুপির সুযোগ দেওয়া হচ্ছে শাসকপন্থী চিকিৎসক প্যানেলকে। অভিযোগ উড়িয়ে শাসকপন্থীদের দাবি, প্রার্থী ও গণনার কাজে যুক্ত কর্মীরা টানা কাজ করে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। কর্মীও কম। তাই বিশ্রামের জন্য বিরতি রাখা হচ্ছে।

Advertisement

গত ১৯ অক্টোবর গণনা শুরু হয়। প্রথমে ‘জি’ ক্যাটেগরির গণনা হয়েছে। ওই দিন তা শেষ হতে গভীর রাত থেকে ‘এইচ’ ক্যাটেগরি, অর্থাৎ রাজ্যের সমস্ত রেজিস্টার্ড চিকিৎসকদের ব্যালট গোনা শুরু হয়। ওই ক্যাটেগরিতে ২৬ হাজার ৭০০ মতো ভোট পড়েছে। শুক্রবার তৃতীয় দিনে বেলা ১২টা থেকে গণনা শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টায় শেষ হয়। তখনও পর্যন্ত ৫০ শতাংশ গণনা হয়েছে। আজ, শনিবার বেলা ১২টা থেকে আবার গণনা শুরু হবে। গণনা শেষ হতে রবিবার হয়ে যাবে বলেই মনে করছে সব শিবির।

কিন্তু রবিবার ছুটির দিনে কি নির্বাচনে যুক্ত কর্মীরা কাজে আসবেন? আবার সোমবার কালীপুজোয় সরকারি ছুটি। তার পরে ভাইফোঁটার ছুটি। তা হলে ফলাফল বেরোতে কি আরও চার-পাঁচ দিন? এমন সংশয়ও দেখা দিয়েছে। ছ’টি চিকিৎসক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টর্সের তরফে চিকিৎসক মানস গুমটা বলেন, ‘‘১৭-১৮ ঘণ্টা করে গণনা বন্ধ রাখার নেপথ্যে বিশেষ অভিসন্ধি রয়েছে। আগে একটানা গণনা করে দেড় দিনের মধ্যে ফলাফল বেরিয়ে যেত। এ বারে তা দু’দিন হতে পারত। কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে দেরি করা হচ্ছে।’’ জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টর্স প্যানেলের অভিযোগ, এ দিন গণনা শুরু হওয়ার পর থেকেই তাদের অজস্র ব্যালট বাতিল হতে থাকে। দেখা যায়, ওই প্যানেলের সাত জন প্রার্থীই ভোট পেয়েছেন, এমন ব্যালটে অতিরিক্ত আরও একটি ভোট দেওয়া হয়েছে। আর তাতেই ব্যালটটি বাতিল হচ্ছে। কারণ, সেখানে মাত্র সাতটি ভোটই দেওয়া যাবে।

Advertisement

মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টারের সম্পাদক, চিকিৎসক অংশুমান মিত্র ও সার্ভিস ডক্টর্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাস যৌথ ভাবে বলেন, ‘‘গণনায় অতিরিক্ত দেরি করে সেই সুযোগে শাসকদল নানা কারচুপি চালাচ্ছে। নকল ব্যালট ছাপানো ও ফোটোকপি করে ছাপ্পা ভোট, এ সবের ফরেন্সিক তদন্তের দাবি করেছি।’’ যদিও শাসকপন্থী চিকিৎসক ও ‘এইচ’ প্যানেলের প্রার্থী কৌশিক বিশ্বাসের দাবি, ‘‘সিপিএম কুখ্যাত রিগিং মেশিনারি থেকে বেরোতে পারছে না। এমন নকল ব্যালট ছাপিয়েছে, যা সহজেই ধরা পড়ছে। রিগিং মেশিনারি ব্যর্থ হওয়াতেই অভিযোগ করছেন।’’

জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টর্স প্যানেলের তরফে বৃহস্পতিবার অভিযোগ তোলা হয়েছিল যে, তাদের প্রার্থী অর্জুন দাশগুপ্তের নাম অসংখ্য ব্যালটে ছিলই না। এই ঘটনা এবং দুর্নীতির প্রতিবাদে এ দিন হাই কোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেন অর্জুন। শাসকপন্থী প্যানেলের প্রার্থী, চিকিৎসক সুদীপ্ত রায় বলেন, ‘‘অর্জুনবাবু গণনা কেন্দ্রের বাইরে ব্যালট নিয়ে গিয়েছেন বলে অভিযোগ। ওঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করা হবে।’’ আর সজলদের দাবি, ‘‘যেখানে ৫০ শতাংশের বেশি ছাপ্পা ভোট, সেই নির্বাচন বাতিল করা প্রয়োজন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement