কোহলিকে কাঁধে তুলে নিলেন রোহিত। ছবি পিটিআই
ভারতের জয়ের পর এত চেঁচিয়েছেন যে গলা ভেঙে গিয়েছে। ম্যাচের পর সঞ্চালক রবি শাস্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে রোহিত শর্মার কথা শুনে সেটা বোঝা গেল। বার বার ভেঙে গেল গলা, কাশির দমক এল। তার মাঝেই বিরাট কোহলির অকুণ্ঠ প্রশংসায় ভরিয়ে দিতে ভুললেন না রোহিত। কোহলি এবং হার্দিক পাণ্ড্যের জুটিই যে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়েছে, এটা জানাতে ভুললেন না।
প্রকাশ্যে কোহলির প্রশংসা করার আগে অবশ্য মাঠেই কোহলিকে ভালবাসায় ভরিয়ে দেন রোহিত। ২০০২ সালে ন্যাটওয়েস্ট ট্রফি জয়ের পর মহম্মদ কাইফের কোলে উঠে পড়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। রবিবারের মেলবোর্নে কার্যত একই দৃশ্য দেখা গেল। এ বার ম্যাচের নায়ক কোহলিকেই নিজের কাঁধে তুলে নিলেন রোহিত। কয়েক পাক ঘুরলেন। সামনে থাকা হার্দিক তখন চেঁচিয়েই চলেছেন। দলের বাকিরা যে যার মতো করে উল্লাসে ব্যস্ত। অধিনায়কের আতিশয্য পেয়ে কোহলিও তখন কিছুটা অবাক। তবে মুখে সব সময় লেগেছিল হাসিটা।
রোহিত বললেন, “বিশ্বকাপের মতো প্রতিযোগিতায় জিতে শুরু করা, তা-ও আবার পাকিস্তানের মতো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে, এর থেকে ভাল অনুভূতি আর হয় না। আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বেড়ে যাবে এই জয়ের কারণে। যে পরিস্থিতিতে ছিলাম এবং যে ভাবে ম্যাচটা জিতলাম, তাতে এই ম্যাচের মাধুর্য আরও বেড়ে গিয়েছে। মন থেকে বলছি, বিরাটকে টুপি খুলে কুর্নিশ। আমার দেখা ভারতের হয়ে খেলা ওর অন্যতম সেরা ইনিংস।”
রান তাড়া করতে নেমে দ্রুত চারটি উইকেট চলে গিয়েছিল ভারতের। সেই জায়গা থেকে বিরাট-হার্দিকের শতরানের জুটি ভারতকে জিতিয়ে দিল। সেই প্রসঙ্গে রোহিত বললেন, “ওরা দু’জনেই যথেষ্ট অভিজ্ঞ। ভারতের হয়ে অনেক ম্যাচ খেলেছে। তাই এই ধরনের পরিস্থিতি ওদের কাছে মোটেই অচেনা নয়। সেই সময়ে মাথা ঠান্ডা রেখে ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া খুবই দরকার ছিল। ওরা ঠিক সেটাই করেছে।”
ম্যাচের ভাগ্য বার বার পেন্ডুলামের মতো দুলেছে। এক সময় মনে হচ্ছিল নিশ্চিত ভাবে জিতছে পাকিস্তান। সেখান থেকে ম্যাচ বের করে নিল ভারত। সেই প্রসঙ্গে রোহিত বলেছেন, “ভারত-পাকিস্তানের মতো ম্যাচে এ রকম দৃশ্যই দেখা যাওয়া উচিত। আমরা বরাবরই চেষ্টা করছিলাম যাতে শেষ পর্যন্ত ম্যাচে টিকে থাকা যায়। এটাই সবার কাছে বার্তা ছিল এবং আমাদের পরিকল্পনার মধ্যে ছিল। নিজেদের মধ্যে এ নিয়ে অনেক বার কথা বলেছি। পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন, নিজেদের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে যে, যে কোনও পরিস্থিতি থেকে আমরা ম্যাচ জিততে পারি। বিরাট এবং হার্দিকের মধ্যে শতরানের জুটিই আমাদের ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।”
পিচ সম্পর্কে রোহিতের পর্যবেক্ষণ, “পিচে বোলারদের জন্য অনেকটাই সাহায্য ছিল। বল পড়ে ভাল ব্যাটে আসছিল। সুইং করছিল। আমাদের বোলাররা সেটা ভাল ভাবেই কাজে লাগিয়েছে। গোটা পরিবেশটাই কাজে লাগিয়েছি আমরা। দলে যারা রয়েছে তারা প্রত্যেকেই নিজেদের ভূমিকা সম্পর্কে স্পষ্ট ভাবে জানে। মাঝের সময়টায় দারুণ জুটি হয়েছে। কারণ লক্ষ্য আমাদের কাছে মোটেই সহজ ছিল না। পিচ যে রকম আচরণ করছে, সে রকম ভাবে হিসাব কষেই আমরা রান তাড়া করছিলাম। জানতাম যে এই পিচে ওই রান তাড়া করতে গেলে নিজেদের নিংড়ে দিতে হবে।”