বনশ্রী মাইতি— ফাইল চিত্র।
শুক্রবার রাতে দল ছাড়লেন শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ উত্তর কাঁথির তৃণমূল বিধায়ক বনশ্রী মাইতি। তিনি বলেছেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে আমি রাজনীতিতে এসেছি। ফলে শুভেন্দু যেখানে যাবেন, সেখানেই যাব ঠিক করেছি।’’ অর্থাৎ, শনিবার মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় বনশ্রী বিজেপি-তেই যোগদান করবেন। তবে দল ছাড়লেও বনশ্রী বিধায়কের পদ ছাড়েননি। বিজেপি-তে যোগদান করার পর তিনি বিধায়ক পদ ছাড়তে পারেন বলে জল্পনা চলছে।
শুক্রবার রাতে ইমেল করে সর্বভারতীয় তৃণমূল সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেন বনশ্রী। ২০১১ সালে তৃণমূলের প্রতীকে বিধায়ক হয়েছিলেন তিনি। ২০১৬ সালেও তিনি ওই কেন্দ্র থেকেই জিতেছিলেন। তবে বরাবরই পূর্ব মেদিনীপুর জেলার রাজনীতিতে কাঁথির অধিকারী পরিবারের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলেই বনশ্রী। সেই সুবাদেই মনে করা হয়েছিল শুভেন্দুর সঙ্গে তিনিও তৃণমূল ত্যাগ করবেন। সেই প্রত্যাশামতোই দলনেত্রীকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন উত্তর কাঁথির এই মহিলা বিধায়ক। ঘটনাপ্রবাহ বলছে, মেদিনীপুরের জনসভা থেকে যে সমস্ত তৃণমূল বিধায়ক দলবদল করবেন, তাঁদের মধ্যে বনশ্রীও থাকবেন।
প্রসঙ্গত, শুভেন্দুর তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পর থেকেই এক এক করে তৃণমূল বিধায়কদের দল ছাড়ার পালা শুরু হয়েছে। শুভেন্দুর পরেই বৃহস্পতিবার দল ছেড়েছিলেন আসানসোল পুরসভার প্রধান প্রশাসক তথা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তবে তিনি দল ছাড়লেও বিধায়কপদ এখনও ছাড়েননি। তার পর শুক্রবার সকালে দল ছাড়েন ব্যারাকপুরের বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত। তিনিও তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতাকে মেল পাঠিয়ে তৃণমূল ত্যাগ করেন। তবে শীলভদ্রও বিধায়কপদ ছাড়েননি। জানিয়েছেন, মানুষের ভোটে তিনি বিধায়ক হয়েছিলেন। মানুষ তাঁর কাছ থেকে কাজের প্রত্যাশা করেন। তাই তিনি বিধায়কপদ ছাড়ছেন না। যদি মানুষ বলে, তা হলে তিনি বিধায়কপদ ছাড়তেও রাজি।
আরও পড়ুন: আকসাই চিন থেকে কারাকোরাম গিরিপথে জুড়বে নয়া চিনা সড়ক
এর পরেই রাতে বনশ্রীর দলত্যাগের খবর পৌঁছয়। অমিতের সভার আগে তৃণমূলের আরও কোনও বিধায়ক দলত্যাগ করেন কি না, তা নিয়েই এখন জল্পনা শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গত, শুক্রবার সন্ধ্যায় কালীঘাটের বাড়িতে দলের সাপ্তাহিক কোর কমিটির বৈঠক করেছেন মমতা। সেখানে দলবদল নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেই খবর। সূত্রের দাবি, সেখানে ঠিক হয়েছে, যাঁরা চলে যেতে চাইছেন, তাঁরা চলে যেতে পারেন। দলের তরফে তাঁদের সঙ্গে আর কোনও আলোচনা করা হবে না। দলের এক নবীন সাংসদের কথায়, ‘‘কতজন যাবে! ২০ জন বা ২২ জন! ওঁরা চলে গেলেই ভাল। অনেক বেনোজলকে দলে ঢোকানো হয়েছিল। এই সময়ে তাঁরা বেরিয়ে গেলে দলের ভাল হবে।’’
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর ইস্তফা গ্রহণ করলেন না স্পিকার, সোমবার হাজিরার নির্দেশ