IPS

আমলা সেজে প্রতারণা! ঠাঁই গারদে

দুর্গাপুরে দায়ের করা প্রতারণার মামলায় মঙ্গলবার অরূপকে দুর্গাপুর আদালতে তোলা হলে তাঁকে আট দিন সিআইডি-র হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর ও কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:৫৫
Share:

অরূপ নন্দী। নিজস্ব চিত্র

গাড়িতে নীল বাতি। ধোপদুরস্ত জামাকাপড়। সঙ্গে আইএএস অফিসারের পরিচয়পত্র। অভিযোগ, সেটা ভুয়ো। প্রধানত দুর্গাপুর শহরের মানুষকেই তিনি বেছে নিয়েছিলেন শিকার হিসেবে। কখনও সরকারি চাকরি, কখনও বা সরকারি ফ্ল্যাট, কখনও মদের দোকানের লাইসেন্স, কখনও ওষুধের দোকান, স্ক্র্যাপের টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ২০১৩ সালের পর থেকে শিল্পশহরের বহু মানুষকে ঠকিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। সোমবার দক্ষিণ কলকাতার ঠাকুরপুকুর থেকে অরূপ নন্দী নামে সেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশ (সিআইডি)।

Advertisement

দুর্গাপুরে দায়ের করা প্রতারণার মামলায় মঙ্গলবার অরূপকে দুর্গাপুর আদালতে তোলা হলে তাঁকে আট দিন সিআইডি-র হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। ২০১৯ থেকে সিআইডি তাঁকে খুঁজছিল। অরূপ নন্দী ছাড়াও রাজা নন্দী, শান্তকুমার মিত্র, অনুপম নন্দী-সহ বিভিন্ন নামে নিজের পরিচয় দিতেন তিনি। অভিযোগ, ওই সব নামে জাল আধার কার্ড, ভোটার কার্ড রয়েছে তাঁর। প্রতারণার অভিযোগে কলকাতার সার্ভে পার্ক ও গড়িয়াহাট থানার পুলিশও ওই ব্যক্তিকে খুঁজছিল বলে সিআইডি সূত্রের খবর।

শান্তনু পাল নামে দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারের একটি হোটেলের কর্মী ২০১৮-য় দুর্গাপুর থানায় প্রথমে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। শান্তনুবাবু এ দিন ফোনে জানান, মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচয় দিয়ে অরূপ পুজোর সময়ে, বর্ষশেষে সপরিবারে তাঁদের হোটেলে উঠতেন। আসতেন নীল বাতি লাগানো গাড়িতে। আইএস অফিসার এবং নবান্নের বিশেষ সচিব হিসেবে পরিচয় দিতেন নিজের। সিআইডি-র খবর, কলকাতায় সরকারি আধিকারিকদের জন্য পিপিপি মডেলে তৈরি ফ্ল্যাট মুখ্যমন্ত্রীর কোটায় চার ভাগের এক ভাগ দামে পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও টাকা নিতেন অরূপ।

Advertisement

শান্তনুবাবু জানান, একটি ফ্ল্যাটের জন্য তিনি ২০১৪ থেকে দফায় দফায় বেশ কয়েক লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন অরূপকে। ‘‘নবান্নের ছাপ মারা সরকারি কাগজপত্র দেওয়া হয়েছিল। উনি আসতেন নীল বাতির গাড়ি চড়ে। সব মিলিয়ে অবিশ্বাস হয়নি। পরে বুঝতে পারি, সবটাই জাল,’’ বলেন শান্তনুবাবু। তিনি জানান, তাঁর পরিচিত অনেকে জমি, মদের দোকানের লাইসেন্স প্রভৃতির জন্য প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা দিয়েছেন ওই ব্যক্তিকে। শান্তনুবাবু বলেন, ‘‘বহু দিন অপেক্ষা করে ফ্ল্যাট না-পেয়ে শেষে ২০১৮-র ২৩ সেপ্টেম্বর থানায় অভিযোগ দায়ের করি। তার পর থেকে উনি হোটেলে আসা বন্ধ করে দেন। বন্ধ করে দেন মোবাইলও।’’

ওই ব্যক্তি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তো বটেই, এমনকি ভিন্ রাজ্যেও এই ধরনের প্রতারণায় জড়িত বলে প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছে সিআইডি। দুষ্টচক্রে আর কে কে আছে, প্রতারণার জাল কত দূরে ছড়িয়েছে— ধৃতকে জেরা করে সেই বিষয়ে তথ্য জোগাড় করতে চাইছে সিআইডি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement