নন্দীগ্রাম দিবসে মমতার নির্দেশে সক্রিয় থাকবে তৃণমূল। পাল্টা নিজের বিধানসভায় জোড়া কর্মসূচি নিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
সোমবার ১৪ মার্চ! ২০০৭ সালে এই দিনেই নন্দীগ্রামে গুলি চালিয়েছিল পুলিশ। তার পরের বছর ২০০৮ সাল থেকেই এই দিনটিকে নন্দীগ্রাম দিবস হিসেবে পালন করে ভুমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি। নেতৃত্বে থাকে তৃণমূল। এই আন্দোলনে মুখ হিসেবে রাজ্য রাজনীতিতে উঠে এসেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এখন সেই শুভেন্দু নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। তাই এখন নন্দীগ্রাম দিবস পালনে নন্দীগ্রামেই বেগ পেতে হয় তৃণমূলকে। তবুও এই কর্মসূচি পালনে বিরোধী বিজেপি-কে নন্দীগ্রামের জমি ছাড়তে নারাজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। ফলে সোমবার নন্দীগ্রামের শহীদ তর্পণ কর্মসূচি ঘিরেই উত্তপ্ত হতে পারে রাজ্য রাজনীতি।
সোমবার নন্দীগ্রামে জোড়া কর্মসূচি নিয়েছে শাসকদল। প্রথমটি হবে গোকুলনগরের মালপল্লিতে। সেখানে প্রথমে শহীদ বেদীতে মাল্যদান। পরে গৌরাঙ্গের মুর্তিতে মাল্যদান করে হরিকীর্তনের আয়োজন করেছেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা। পরে সোনাচূড়ার ভাঙাবেড়ায় আরও একটি অনুষ্ঠানে শহীদ বেদীতে মাল্যদান করে রাজনৈতিক কর্মসূচি রাখা হয়েছে। যেখানে অংশ নিতে কলকাতা থেকে আসবেন রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন, তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ ও সঞ্জয় বক্সী প্রমুখ। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ, বিধায়কদের থাকতে হবে বিধানসভার অধিবেশনে। তা সত্ত্বেও নন্দীগ্রামে আনার চেষ্টা হচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দুই মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র ও অখিল গিরিকে।
তৃণমূলকে টক্কর দিতে তৈরি গেরুয়া শিবিরও। নেতৃত্বে খোদ শুভেন্দু। তাঁর নেতৃত্বে বিজেপি-র তরফে নন্দীগ্রামের গণহত্যার বর্ষপূর্তিতে জোড়া রাজনৈতিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। প্রথমটি হবে অধিকারী পল্লিতে। দ্বিতীয়টি হবে সোনাচূড়ায়। দুটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বিরোধী দলনেতা স্বয়ং। বিধানসভার বাজেট অধিবেশন চললেও, তাঁর কাছে গুরুত্ব পাচ্ছে এই জোড়া রাজনৈতিক কর্মসূচি। সূত্রের খবর নন্দীগ্রামে দুটি কর্মসূচি পালনের পর কলকাতায় বিধানসভা অধিবেশনে যোগ দিতে পারেন শুভেন্দু।
তৃণমূলকে টক্কর দিতে তৈরি গেরুয়া শিবিরও। নেতৃত্বে খোদ শুভেন্দু। তাঁর নেতৃত্বে বিজেপি-র তরফে নন্দীগ্রামের গণহত্যার বর্ষপূর্তিতে জোড়া রাজনৈতিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। প্রথমটি হবে অধিকারী পল্লিতে। দ্বিতীয়টি হবে সোনাচূড়ায়। দুটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বিরোধী দলনেতা স্বয়ং। বিধানসভার বাজেট অধিবেশন চললেও, তাঁর কাছে গুরুত্ব পাচ্ছে এই জোড়া রাজনৈতিক কর্মসূচি। সূত্রের খবর নন্দীগ্রামে দুটি কর্মসূচি পালনের পর কলকাতায় বিধানসভা অধিবেশনে যোগ দিতে পারেন শুভেন্দু।
তবে বিজেপি-র কর্মসূচিকে কটাক্ষই করেছে তৃণমূল শিবির। নন্দীগ্রাম তৃণমূলের সভাপতি স্বদেশ দাসের বক্তব্য, ‘‘নন্দীগ্রাম আন্দোলনে বিজেপি-র কোনও কৃতিত্ব বা অবদান কোনওটাই নেই। তাই ওদের এই কর্মসূচির মূল্য নেই। আর নন্দীগ্রাম দিবসের অনুষ্ঠানে কোনও রাজনৈতিক দলের পতাকা থাকে না। তাই তৃণমূলের পতাকাও সেখানে থাকবে না। কিন্তু বিজেপি কৃতিত্ব দাবি করতে তাদের অনুষ্ঠানে দলীয় পতাকার ব্যবহার করবে।’’ শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে গেলেও, নন্দীগ্রামের জনমানসে তার প্রভাব নেই বলেই দাবি করেছেন স্বদেশ।
জবাবে নন্দীগ্রামের বাসিন্দা তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বিজেপি-র সহসভাপতি প্রলয় পাল বলেন, ‘‘বিজেপি কোনও কৃতিত্ব দাবি করে না। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় লালকৃষ্ণ আডবাণী-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিজেপি নেতা নন্দীগ্রামে এসেছিলেন অত্যাচারিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে। আর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুবাবুও কোনওদিনও আন্দোলনে নিজের কৃতিত্ব দাবি করেননি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘২০০৭ সালের ১৪ মার্চের পর যিনি নন্দীগ্রামের মানুষের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রেখেছেন তিনি শুভেন্দু অধিকারী। গত বিধানসভা ভোটেই প্রমাণ হয়ে গিয়েছে নন্দীগ্রাম কার পাশে আছে। আমরা কৃতিত্ব দাবি করতে নয়, প্রয়াত মানুষদের স্মরণ করতেই কর্মসূচির আয়োজন করেছি।’’
সম্প্রতি নন্দীগ্রামের ভোটের ফলাফল নিয়ে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, আমাকে হারাতে সমঝোতা (অ্যাডজাস্টমেন্ট) করা হয়েছিল।’’ তবে সেই সমঝোতা কারা করেছিলেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু তাঁর ভাষণে বলেননি মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর এমন বক্তব্যে নন্দীগ্রাম নিয়ে নতুন করে বির্তক দানা বেঁধেছে। সঙ্গে শনিবার তৃণমূল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ভোটের দিন আমাকে ফোনে শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, তিনি হেরে গিয়েছেন। কিন্তু পরে কী ভাবে তিনি জিতে যান, তা জানি না।’’ সেই দাবিকে সমর্থন করেন সম্প্রতি বিজেপি থেকে তৃণমূলে যাওয়া জয়প্রকাশ। তাই নন্দীগ্রাম দিবসে আবারও নতুন কোনও বির্তক যোগ হতে পারে বলেই মনে করছে রাজ্য রাজনীতির কারবারিরা।