নিয়মমাফিক জুলাই মাস থেকে বেতন বাড়তে পারে রাজ্য সরকারি কর্মচারিদের। প্রতীকী ছবি
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বেতনবৃদ্ধি খাতে বাজে়টে বরাদ্দ হল প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। তাইআগামী জুলাই মাসে বর্ধিত বেতন হাতে পেতে পারেন তাঁরা। শুক্রবার বিধানসভায় ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের জন্য যে বাজেট পেশ করা হয়েছে, তাতে বেতন খাতে বরাদ্দ অর্থের পরিমাণেই সে বিষয়ে ইঙ্গিত মিলেছে বলেই খবর। বাজেট প্রস্তাবে বেতন খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি পরিমাণ প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। বর্তমান অর্থবর্ষে এখনও রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতার (ডিএ) হার বৃদ্ধির ঘোষণা হয়নি। যা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে সরকারি কর্মচারি ইউনিয়নগুলির। কিন্তু বাজেটে বাৎসারিক বেতন বৃদ্ধির ইঙ্গিতে সেই ক্ষোভ অনেকটাই কমে যেতে পারে বলেই মনে করছে প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা।
নিয়মমাফিক সরকারি কর্মীদের তিন শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধি হয়। সরকারি কর্মীদের এখন যা বেতন, তার থেকে এক শতাংশ বৃদ্ধির জন্য মাসে প্রয়োজন হবে বাড়তি ৬৪ কোটি টাকা। বেতনের জন্য এক বছরে ৭৬৮ কোটি টাকা বাড়তি খরচ হবে। ফলে মূল বেতনের সঙ্গে তিন শতাংশ হারে বৃদ্ধিতে খরচ হতে পারে বছরে প্রায় দু’হাজার ৩০০ কোটি টাকা। বাজেট প্রস্তাবে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে বেতন খাতে ৬০ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এটা গত অর্থবর্ষের খরচের তুলনায় প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বেশি। ২০২১-২২ আর্থিক বছরের বরাদ্দ ছিল ৫২ হাজার ৯০৪ কোটি টাকা। অথচ ৫৬ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।
সূত্রের খবর, ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সরকারি কর্মীদের বর্ধিত হারে বেতন প্রদান শুরু হয় ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। এর জন্য জারি হওয়া অর্থদফতরের রোপা ১৯-এর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল,প্রতি বছর পয়লা জুলাই বেতন বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে। সেই নিয়ম মেনেই বেতন বৃদ্ধি হতে পারে বলেই খবর। কিন্তু সেই বিজ্ঞপ্তিতে ডিএ বৃদ্ধি কিংবা ঠিক কোন হারে বছরে বেতন বৃদ্ধি হবে, তার কোনও উল্লেখ ছিল না।
বেতন বৃদ্ধি হলেও, ডিএ বৃদ্ধির বিষয়টি এখনও অনিশ্চিত বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ বাজেট পেশের পর সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক বঞ্চনার জন্যই ডিএ দেওয়া যাচ্ছে না। রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি ভালো হলেই সরকার নিজে থেকে ডিএ বৃদ্ধি করবে। বাজেটে বরাদ্দ করা হলেও, যতদিন না এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি হচ্ছে, ততদিন এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট কোনও কথা প্রকাশ্যে বলা হবে না বলেই সূত্রের খবর।
কো-অর্ডিনেশন কমিটির নেতা বিজয়শঙ্কর সিংহ বলেন, ‘‘তিন শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধি সরকারি নিয়মেই বলা হয়েছে। কিন্তুআমাদের ডিএ এখনও ২৮ শতাংশ বাকি। সরকার এখনও এ বিষয়ে যে কথা বলছে তা আমরা মানছি না। কেন্দ্র ও রাজ্যের নীতির জন্য এই ঘটনা ঘটছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ওপর ডিএ নির্ধারিত হয়। কেন্দ্রীয় সরকার ৩১ শতাংশ ডিএ দিয়ে দিয়েছে। অধিকাংশ রাজ্যও তা মেনে নিয়েছে। দু একটি রাজ্যে হয়তো হয়নি।’’তাই মহার্ঘ ভাতা-সহ ১৩টি দাবি নিয়ে কো-অর্ডিনেশন কমিটি ২৮-২৯ মার্চ ধর্মঘটে সামিল হবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন।