(বাঁ দিকে) রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস এবং (ডান দিকে) ওমপ্রকাশ মিশ্র। —ফাইল চিত্র।
আবারও রাজ্য শিক্ষা দফতর এবং তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত প্রকাশ্যে। এ বার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে সাত দিনের মধ্যে লিখিত ভাবে ক্ষমা চাইতে হবে জানিয়ে মানহানির নোটিস পাঠালেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র। অন্যথায় আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী।
ওই নোটিস অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ১ জুলাই রাত ১১টা ৫০ মিনিটে এক জনের কাছ থেকে একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পান ওমপ্রকাশ। তাতে জানতে পারেন, তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যপাল। সেই তথ্য সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সংবাদমাধ্যমেও খবর প্রকাশিত হয়। ওমপ্রকাশের আইনজীবী জানিয়েছেন, এই ‘মিথ্যা’ প্রচারের ফলে তাঁর মক্কেলের সম্মানহানি হয়েছে। সে কারণে এই নোটিস পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে ওমপ্রকাশের কাছে লিখিত ভাবে ক্ষমা চাইতে হবে রাজ্যপালকে।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য গ্রেফতার হওয়ার পর, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওমপ্রকাশকে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য পদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সেই দায়িত্ব দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। তিন মাস ওই পদে ছিলেন তিনি। এখন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রথীন বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবারই তাঁকে জরুরি ভিত্তিতে দায়িত্ব দেন আনন্দ বোস। অন্য দিকে, ওমপ্রকাশের বিরুদ্ধে জমি হস্তান্তরে দুর্নীতি, শিক্ষক ও কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিষয়ে বেনিয়ম-সহ একাধিক অভিযোগের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যপাল। তদন্ত করবেন উপাচার্য। গত ২৮ জুন কর্মসমিতির বৈঠকে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সেখানে তৎকালীন উপাচার্য সঞ্চারী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যপাল। এই প্রসঙ্গে ওমপ্রকাশ বলেন, ‘‘শিক্ষা ব্যবস্থাকে নষ্ট করতে আচার্যের চক্রান্ত প্রকাশ্যে আনার ভূমিকায় আমি অন্যতম। আমার জুনিয়র কেউ তদন্ত করবে নাকি? আমি স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করেছি। ওঁর এক্তিয়ারে তদন্ত করার ক্ষমতা থাকলে করবেন।’’
উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য পদে এখন ওমপ্রকাশ না থাকলেও তাঁকে কর্মসমিতিতে রেখেছে শিক্ষা দফতর। প্রসঙ্গত, ওমপ্রকাশ রাজ্য রাজনীতির এক পরিচিত নাম। অধ্যাপনার পাশাপাশি, দীর্ঘ সময় জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পর শুভেন্দু অধিকারী হাত ধরে তিনি তৃণমূলে যোগদান করেছিলেন। সম্প্রতি বার বার তিনি রাজ্যপালের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। উপাচার্য নিয়োগ নিয়েও রাজ্যপালের দিকে আঙুল তুলেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যপাল। এ বার তিনি পাল্টা মানহানির নোটিস পাঠালেন।