ছবি: রয়টার্স।
জেলায় ধাপে ধাপে ফিরতে শুরু করেছে পরিযায়ী শ্রমিকেরা। দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে ফেরা ওই শ্রমিকদের বাড়িতে নিভৃতবাসে (কোয়রান্টিন) থাকার পাশাপাশি, সকলের করোনা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জেলা স্বাস্থ্য দফতর। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত থেকে ‘পিছু হঠল’ স্বাস্থ্য দফতর। যে সব শ্রমিকদের কেবল করোনা উপসর্গ থাকবে, কেবল তাঁদেরই করোনা পরীক্ষা করানো হবে বলে খবর।
ইতিমধ্যেই গত কয়েকদিনে সরকারি উদ্যোগে তামিলনাড়ু, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা ও ওড়িশা থেকে ট্রেনে এবং গাড়ি ভাড়া করে জেলায় ফিরেছেন কয়েকশো পরিযায়ী শ্রমিক। তাঁদের অধিকাংশরই মেচেদায় পথসাথী কোয়রান্টিন সেন্টার, চণ্ডীপুর করোনা হাসপাতালে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হচ্ছে। পরে তাঁদের ঘরে নিভৃতবাসে পাঠানো হচ্ছিল এবং করোনা পরীক্ষার জন্য লালারস সংগ্রহ শুরু হয়েছিল।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ওই সব শ্রমিকদের সকলের স্বাস্থ্য এবং করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়ে হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে প্রচুর ভিড় জমছে। ওই বিশাল সংখ্যক ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করতে গিয়ে কার্যত হিমসিম খেতে হচ্ছে নমুনা পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিকে। এই পরিস্থিতিতে কেবল উপসর্গ থাকা ব্যক্তিদের নমুনা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিল স্বাস্থ্য দফতর। তবে দেশের মহারাষ্ট্র, গুজরাত, দিল্লি এবং রাজ্যের কলকাতা, হাওড়া ও হগলি থেকে জেলায় ফিরে আসা সকলের করোনা পরীক্ষা করা হবে। কারণ, ওই সব এলাকাগুলিতে করোনা সংক্রমণের হার বেশি।
পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল এ ব্যাপারে বলেন, ‘‘ভিন্ রাজ্য ও জেলা থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে যাঁদের করোনা উপসর্গ রয়েছে, এবার শুধু তাঁদেরই করোনা পরীক্ষা করা হবে। কিন্তু ওই নিয়ম মহারাষ্ট্র, গুজরাত, দিল্লি, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের ক্ষেত্রে প্রয়োজ্য নয়। ওই সব এলাকা থেকে ফেরা সকল ব্যক্তিরই করোনা পরীক্ষা করানো হবে।’’
পূর্ব মেদিনীপুরে করোনা আক্রান্তের এলাকার পরিধি বেড়েছে গত কয়েক দিনে। এগরা, হলদিয়া, তমলুকের মতো পুরনো এলাকা ছাড়াও কোলাঘাট, মহিষাদল, কাঁথির মতো নতুন নতুন এলাকায় করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলছে প্রায় প্রতিদনই। যদিও সব ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্য দফতরের যুক্তি, ওই সব এলাকায় করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিললেও তাঁরা জেলায় সংক্রমিত হননি। ভিন রাজ্য বা জেলা থেকেই তাঁরা সংক্রমিত হয়ে জেলায় ফিরেছেন। এই বিষয়টিই মাথায় রেখে জেলাবাসীর একাংশের প্রশ্ন, যদি বাইরে থেকে সকলে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আসছেন, তাহলে তাঁদের সকলের লালারসের পরীক্ষা হবে না?
এছাড়া, জেলাবাসী আরও একটি দিক তুলে ধরছেন। তাঁদের বক্তব্য, বর্তমানে বেশিরভাগ করোনা আক্রান্তরই কোনও উপসর্গ থাকছে না। ফলে উপর্সগহীন ব্যক্তিদের পরীক্ষা না করানো নিজেদের পায়ে কুড়ুল মারারই সমান হবে বলে অভিমত তাঁদের। জেলাবাসীর ওই দুই প্রশ্নের অবশ্য কোনও সদুত্তর মেলেনি স্বাস্থ্য দফতরের তরফে।