মিড ডে মিলের সমস্যা নিয়ে বিজেপি’র ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে স্কুলে গিয়ে শিক্ষকদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার শিলিগুড়ির হিন্দি হাই স্কুলে ওই ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষিকারা পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন। অভিযোগ, এ দিন স্কুল শুরুর সময় বিজেপি’র একদল ছাত্র-যুবনেতা স্কুলে আসেন। তাঁরা ওই বিশেষ রাজনৈতিক দলের কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে স্কুলে মিড ডে মিল বন্ধ হওয়ার পিছনে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দায়ী করেন। শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাদের বোঝানোর চেষ্টা করলে তাঁরা কোনও কথা শুনতে চাননি বলে অভিযোগ। উল্টে মিড ডে মিলের দায়িত্ব না নিলে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দেন বলেও অভিযোগ। এর পর পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের রাজ্য কমিটির যুগ্ম সম্পাদক চন্দন রাউত বলেন, “মিড ডে মিল অবিলম্বে চালু করতে হবে এই দাবি তোলা হয়েছে। স্কুলের ছাত্রদের একাংশ আমাদের ডেকেছিল। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হুমকির অভিযোগ ঠিক নয়। ভোটের আগে স্কুলের সমস্যাকে রাজনীতির রং দেওয়ার চেষ্টা চলছে।”
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অভিযোগ, স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিন কয়েক আগে ইস্তফা দিয়েছেন। অপর কোনও শিক্ষক দায়িত্ব নিতে চাইছেন না। নিয়ম মাফিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিড ডে মিলের দায়িত্বে থাকেন। অপর কোনও শিক্ষক খুশি মতো দায়িত্ব নিতে পারেন না। হাইকোর্টের নির্দেশেই তা বলা রয়েছে। বহিরাগত ওই ব্যক্তিদের তা বোঝাতে গেলেও তারা শুনতে চাননি। ছাত্রদের ডেকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা মিড ডে মিল না-হওয়ার জন্য দায়ী বলে বোঝাতে থাকেন। শিক্ষকদের বিরুদ্ধে তাদের উস্কে দিতে থাকেন। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে ওই ব্যক্তিদের তর্ক বাধে। পরে শিক্ষকেরা ফোন করে পুলিশ ডাকেন। মহকুমাশাসক দীপাপ প্রিয়া জানান, নির্বাচনের কাজে তাঁকে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। তবে সর্বশিক্ষা বিভাগের দায়িত্বে থাকা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে তিনি সমস্যা খতিয়ে দেখতে বলেছেন। অভিভাববক মঞ্চের সম্পাদক সন্দীপন ভট্টাচার্য জানান, বহিরাগত এক দল বাসিন্দাকে এনে তাদের দিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হেনস্থা করতে চান স্কুল কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন, “পুলিশকে বলেছি। মিড ডে মিল স্কুল কর্তৃপক্ষকেই চালাতে হবে।”
মিড ডে মিল নিয়ে সমস্যা আগে থেকেই রয়েছে। তার উপর ফি বাড়ানোর বিরুদ্ধে অভিভাবকেরা আন্দোলনে নামেন। ঠিক হয় প্রশাসনের তরফে বৈঠক করে ফি ঠিক না করা পর্যন্ত তা নেওয়া বন্ধ থাকবে। তিন মাসেও বৈঠক হয়নি। স্কুল কর্তৃপক্ষ দিন কয়েক আগে তা মিটিয়ে দিতে চাপ দিলে অভিভাবকেরা ক্ষোভ জানান। এর পরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ইস্তফা দেন।