তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে কার্যালয় খোলা নিয়ে বাদানুবাদের জেরে প্রহৃত হলেন এক ব্যক্তি। জখম অবস্থায় তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার বিকেলে শিলিগুড়ির সূর্যসেন কলোনিতে। আহত ব্যক্তির নাম সঞ্জয় বর্মন। তাঁর বাড়ি ওই এলাকাতেই। রবিবার রাতেই নিতাই দে, প্রবীর সিংহ সহ আরও কয়েক জনের বিরুদ্ধে নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়িতে একটি মারধর ও খুনের চেষ্টার অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযুক্তরা এলাকায় উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও পুলিশ পদক্ষেপ করছে না বলে অভিযোগ করেছেন আহত সঞ্জয়ের মা ও ভাই। ওই দিনই আরও একটি অভিযোগ দায়ের করেন অভিযুক্ত নিতাইবাবুও। তাঁকে মারধর করেছে সঞ্জয় বলে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগ মোহন বলেন, “থানায় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তদন্ত শুরু করা হয়েছে।” নিউ জলপাইগুড়ি ফাঁড়ি সূত্রে জানানো হয়েছে, অভিযুক্তদের খোঁজা হচ্ছে। তাঁদের গ্রেফতার করতে গিয়ে পাওয়া যায়নি। পেলেই গ্রেফতার করা হবে। এখানেই আপত্তি সঞ্জয়বাবুর ভাই সজীবের। তিনি অভিযোগ করেন, “এলাকায় রয়েছেন অভিযুক্তরা। কিন্তু তাঁদের গ্রেফতার দূরে থাক, পুলিশ এক বারও খোঁজ করতেও আসেনি।” অন্য দিকে যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাঁর অন্যতম প্রবীর সিংহ বলেন, “নিতাইকেই সঞ্জয় ও তাঁর মা মারধর করেছে। তাতে খেপে গিয়ে পাড়ার ছেলেরা সঞ্জয়কে মারে। আমি গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশে খবর দিই। পরে শুনি আমার বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের করেন সঞ্জয়বাবু।” সঞ্জয়বাবু পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে অভিনয় করছেন বলে মনে করছেন এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত তথা জেলা তৃণমূলের অন্যতম সম্পাদক কৃষ্ণ পাল। তিনি বলেন, “আমাদের কর্মী নিতাইকে মারধর করে সঞ্জয়। তবে তাঁকে কে মেরেছে তা আমি জানি না।” যদিও এক তৃণমূল কর্মী সুশান্ত দাস সঞ্জয়কে তৃণমূল কর্মী বলেই দাবি করেন।
সূর্যসেন কলোনির সূর্যসেন কলেজ লাগোয়া এলাকায় দোকান ঘর ভাড়ায় নিয়েছিল সঞ্জয়বাবু। দুই বছরের জন্য চুক্তি ছিল। তা আগামী মে মাস পর্যন্ত তা রয়েছে। কিন্তু না চালাতে পেরে তিনি দোকানটি ছেড়ে দেন। দোকান ফাঁকা থাকায় মালিক বলাই সরকার দোকানটি স্থানীয় তৃণমূলকে অস্থায়ী কার্যালয় বানাতে অনুমতি দেন। তাতে চটে যান সঞ্জয়বাবু। তিনি দোকান বন্ধ করে দেন। তাতেই বচসা বেধে যায়। নিতাইবাবু সহ কয়েকজন তাঁর বাড়িতে গিয়ে ঘরটি খুলে দিতে বলে। তর্কাতর্কি হলে সে সময়ে নিতাইকে চড় মারেন সঞ্জয়বাবু। তাঁর অভিযোগ, তাঁর মাকে লাথি মারে অভিযুক্ত। এর পরে তারই প্রতিশোধ নিতে তাঁকে মারধর করা হয় বলে জানা গিয়েছে।