উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন বন্ধ ও রুগ্ণ চা বাগানে পর পর শ্রমিক মৃত্যু নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য চাপানউতোর চলছেই। তারই মধ্যে উত্তরবঙ্গের চা বলয়ে তিন দিনের সফরে আসছেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
আজ, রবিবার শিলিগুড়িতে পৌঁছেই তিনি ডুয়ার্সের বান্দাপানি এবং বীরপাড়া চা বাগান পরিদর্শনে যাবেন। শ্রমিকদের সঙ্গে কথাও বলবেন। দু’টি বাগানেই অচলাবস্থা চলছে। সরকারি সূত্রে খবর, বাগান পরিদর্শনের পরে শ্রমিক সংগঠন সহ চা শিল্পের প্রতিনিধি ও সরকারি কর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন তিনি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বৈঠকে ডাক পড়েছে ডানকান গোষ্ঠীর কর্ণধার জি পি গোয়েঙ্কা-সহ অন্য বন্ধ বাগান মালিকদের। ডানকান গোষ্ঠীর কর্ণধারের সঙ্গে শিলিগুড়ির সার্কিট হাউস তথা স্টেট গেস্ট হাউসে পৃথক ভাবে বৈঠক করবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। শনিবার জি পি গোয়েঙ্কা বলেন, ‘‘আমি বৈঠকে যাব। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কী বলেন তা শুনব।’’
গত কয়েক মাস ধরেই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন বন্ধ ও রুগ্ণ চা বাগানে শ্রমিক মৃত্যু নিয়ে অভিযোগ-পাল্টা দাবি চলছে। রাজ্য প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে, কোনও বন্ধ বাগানেই অপুষ্টি বা অনাহারে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বয়সজনিত কারণে অথবা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গত সপ্তাহে উত্তরবঙ্গ সফরের শেষ দিনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছিলেন, রাজ্যের তরফে যাবতীয় সাহায্য করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় আইন না বদলালে বন্ধ এবং রুগ্ণ চা বাগানের হাল ফিরবে না।
দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার পাল্টা দাবি, বাগানের জমির মালিক রাজ্য সরকার-ই। রাজ্যই লিজে সেই জমি দেয় বাগান মালিককে। ফলে কেউ বাগান বন্ধ করে চলে গেলে, রাজ্যকেই পদক্ষেপ করতে হবে। বন্ধ বাগান নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে বিরোধী চা শ্রমিক সংগঠনগুলিও। সোমবার মন্ত্রী যাবেন ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানে। সেই বাগানটি অবশ্য ভাল-ই চলছে বলে চা শিল্প সূত্রের খবর। চা শিল্প মহলের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রী ভালো-খারাপ, দু’ধরনের পরিস্থিতির বাস্তব ছবিটা দেখে যাচাই করতে আগ্রহী।
বাগানের পরিস্থিতি পর্যালোচনার পরে মঙ্গলবার নিউ জলপাইগুড়ির ‘টি পার্কে’ টি বোর্ডের সদ্য নির্মিত ‘কোয়ালিটি কন্ট্রোল ল্যাবরেটরিরও উদ্বোধন করবেন সীতারামন।