পঙ্কজ গুপ্ত। ভর্তি রয়েছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। নিজস্ব চিত্র।
ভাইফোঁটার সন্ধেয় গুলি চলল শিলিগুড়ি কমিশনারেট এলাকায়। বাইক আরোহী দুই দুষ্কৃতী এক যুবককে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। মঙ্গলবার এনজেপি থানার রাজগঞ্জ ব্লকের সিপাহিপাড়ার ঘটনা। জখম যুবকের নাম পঙ্কজ গুপ্ত। অভিযোগ ওই এলাকা দিয়ে স্কুটি নিয়ে যাওয়ার সময় দুই যুবক পিছন থেকে মোটরবাইকে এসে পঙ্কজকে গুলি করে। তাঁর কোমরের ডান দিক ঘেঁষে গুলিটি চলে গিয়েছে। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে তাঁকে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পঙ্কজ বিপদমুক্ত হলেও তাঁকে বেশ কিছুদিন হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হবে। এ দিন পঙ্কজ বলেন, ‘‘দুই যুবক পিছন থেকে বাইকে এসে হঠাৎ গুলি চালায়। প্রাণে মারার চেষ্টা করেছিল। কাউকে চিনতে পারিনি। কে আমাকে মারতে চাইল তাও বুঝতে পারছি না।’’
পুলিশ জানিয়েছে, ফুলবাড়ি বাসিন্দা পঙ্কজ জমির ব্যবসা করেন। আদি বাড়ি বিহারে হলেও ফুলবাড়িতে দীর্ঘ দিন ধরে থাকেন তিনি। উত্তরকন্যার পিছনে সরকারি জমি দখলের মামলায় জানুয়ারিতে গ্রেফতার হয়েছিলেন। প্রায় মাস দেড়েক জেলেও ছিলেন তিনি। এছাড়াও স্থানীয় এক তৃণমূল নেতাকে ভয় দেখানোর অভিযোগেও পঙ্কজকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ফুলবাড়ি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় একসময় তৃণমূল কর্মী হিসাবে পরিচিত ছিলেন তিনি। ওই এলাকায় তৃণমূলের সাংগঠনিক সম্পাদক মহম্মদ আইদের অনুগামী বলে পরিচিত পঙ্কজকে বিভিন্ন সময়ে দলের হয়ে কাজকর্ম করতে দেখা যেত। তবে জমি দখলের মামলায় গ্রেফতারের পর থেকে ততটা সক্রিয় নন বলে জানাচ্ছেন দলের একাংশ।
এ দিনের ঘটনার পিছনে নিছক ব্যক্তিগত কোনও শত্রুতা রয়েছে না কি জমি ঘিরে কোনও গোলমাল রয়েছে তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। শিলিগুড়ি পুলিশের ডিসি (পূর্ব) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে তদন্ত করছি।’’ তৃণমূল নেতা মহম্মদ আইদ বলেছেন, ‘‘পঙ্কজকে চিনি। তবে গুলি চালানোর পিছনে কী কারণ তা জানি না। পুলিশ তদন্ত করে দেখলে বুঝতে পারবে। ওঁরা পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, ফুলবাড়ি থেকে গজলডোবা, ইস্টার্ন বাইপাস, রাজগঞ্জ ব্লকের একটি বড় অংশে জমির বেআইনি কারবারীরা বরাবর সক্রিয়। এ বারও শিলিগুড়িতে প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিয়ে গজলডোবায় সিন্ডিকেটের সদস্যরা জমি দখল করছে বলে প্রকাশ্যেই অভিযোগ করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভুয়ো নথি তৈরি করে জমি বিক্রি, সরকারি প্রকল্পের ফাঁকা জমি দখলের চেষ্টা, বিভিন্ন এলাকায় খাস জমি দখল করে বাড়ি, কলোনি বসানোর মত ঘটনার বারবার সামনে এসেছে। গত বছরেও শিলিগুড়ির সভা থেকে জমি কারবারীদের বিরুদ্ধে পুলিশকে সক্রিয় হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরেই এনজেপি, প্রধাননগর, ভক্তিনগর, মাটিগাড়া থানা মিলিয়ে ৫০ জনের উপর জমি কারবারী গ্রেফতার হন।