প্রতীকী ছবি
বর্ষবরণের রাতে কাজ থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক তরুণীকে পরপর দু’বার ধর্ষণের অভিযোগ উঠল। মঙ্গলবার রাতে কালিয়াগঞ্জের ধনকৈল এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা কালিয়াগঞ্জের ধনকৈলহাট সংলগ্ন হরিহরপুরের বাসিন্দা। বছর সাতাশের ওই তরুণী একটি হোটেলে কাজ করেন। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ হোটেল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। অভিযোগ, ওই সময় ধনকৈল এলাকারই দুই যুবক তাঁকে রাস্তা থেকে তুলে ধনকৈল মিনি ব্যাঙ্কের পাশে নির্জন এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে জোর করে মদ খাইয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। কোনওমতে সেখান থেকে পালিয়ে যান ওই তরুণী। জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে রাস্তা দিয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন।
অভিযোগ, ওই সময় সেখানকার বাসিন্দা এক গাড়িচালক রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল। তরুণীকে একা পেয়ে তাঁকে জোর করে গাড়িতে তুলে নেয় ওই যুবক। গাড়িতে ফের তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। পরপর দু’বার নির্যাতনের পরে গভীর রাতে ধনকৈল মোড়ের কাছে রাস্তায় বসে কাঁদতে থাকেন ওই তরুণী।
আরও পড়ুন: ওঁরা করেননি গোলমাল, দাবি হোটেলে
তাঁর পরিবারের কোলেরা জানিয়েছেন, অনেক রাতেও মেয়ে না ফেরায় তাঁর খোঁজে বের হন বাড়ির লোকেরা। রাত ৩টে নাগাদ রাস্তায় বসে থাকা ওই তরুণীর খোঁজ মেলে। পরিজনদের কাছে সব কথা জানান ওই তরুণী। এর পরেই স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ পেয়ে শুরু হয় তদন্ত। রাতেই প্রথম ঘটনায় জড়িত এক যুবক এবং ওই গাড়ির চালককে গ্রেফতার করে কালিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ। আরও এক অভিযুক্ত পলাতক। তার খোঁজ চলছে। পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার ধৃত দু’জনকে রায়গঞ্জ জেলা আদালতে পেশ করা হবে।
তদন্তকারীরা জানান, বুধবার সন্ধে সাড়ে ৬টা নাগাদ নির্যাতিতা ও তাঁর মাকে নিয়ে ফের ঘটনাস্থলগুলিতে যায় পুলিশ। জঙ্গল থেকে মেয়েটির চুলের ক্লিপ, অন্তর্বাস ও মদের বোতল উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, প্রথম ঘটনায় অভিযুক্তেরা ওই তরুণীর বাড়ির কাছেই থাকে। স্থানীয় সূত্রে খবর, কয়েক মাস আগে ওই তরুণীর স্বামী দিল্লিতে কাজে গিয়েছেন। তার পর থেকে মায়ের সঙ্গেই থাকেন ওই তরুণী। তাঁর মা বলেন, ‘‘মঙ্গলবার রাত ৮টা নাগাদ হোটেলে মেয়ের সঙ্গে কথা বলে বাড়ি চলে আসি। হোটেল থেকে রাতের খাবার খেয়ে মেয়ে বাড়ি ফিরবে বলে ঘরের দরজা খোলা রেখে শুয়ে পড়েছিলাম। রাত দেড়টার পরেও মেয়ে বাড়ি না ফেরায় ফের হোটেলে গিয়ে খোঁজ করি। হোটেল মালিক জানান, রাত ১০টার আগেই মেয়ে বাড়ি চলে গিয়েছে।’’ তিনি জানান, অনেক খোঁজের পরে ধনকৈল মোড়ে মেয়েকে বসে কাঁদতে দেখেন। তাঁর অভিযোগ, ধর্ষণে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে মেয়েকে মারধর করা হয়। মুখ চেপে ধরে জোর করে মদও খাইয়ে দেয় অভিযুক্তেরা।
জেলা পুলিশ অবশ্য এ নিয়ে কিছু বলেনি। মন্তব্য করেননি কালিয়াগঞ্জ থানার আইসি আশিস দলুইও।