দুলাল সরকার খুনে এখনও তিন অভিযুক্ত অধরা। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার খুনের ঘটনায় ধৃত ‘মূল চক্রী’ নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি এবং স্বপন শর্মাকে তিন দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিলেন মালদহ জেলা আদালতের বিচারক। মঙ্গলবার পুলিশি হেফাজত শেষ হয়েছে নরেন্দ্রনাথ এবং স্বপনের। দুপুরে তাঁদের আদালতে হাজির করানো হলে দুই পক্ষের সওয়াল জবাবের পরে ধৃতদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। অন্য দিকে, ধৃত নরেন্দ্রনাথের আইনজীবীর দাবি, ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হচ্ছে তাঁর মক্কেলকে। তিনি এই ঘটনার নেপথ্যে ‘বড় মাথা’ রয়েছে বলে মন্তব্য করেন। এবং দাবি করেন ‘ঠিকঠাক’ পুলিশি তদন্তের।
এর আগে মালদহ জেলা আদালতে বিচারকের উপস্থিতিতে উদ্ধার হওয়া মোবাইল ফোনের যাবতীয় তথ্য পেন ড্রাইভে স্থানান্তরিত করেছেন সিআইডির সাইবার বিশেষজ্ঞ মমতা চক্রবতী। পুলিশ সূত্রের দাবি, দুলাল খুনে যাঁরা ধরা পড়েছেন, তাঁদের এক জনের মোবাইলে প্রচুর তথ্য রয়েছে। খুনের দু’সপ্তাহ আগে থেকে ধৃত নরেন্দ্রনাথ (বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা) এবং তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ স্বপন শর্মার সঙ্গে ফোনে তাঁর কথা হয়। জানা গিয়েছে, খুনের পরেও দু’জনের এক জনকে ওই মোবাইল থেকে ফোন করা হয়েছিল এবং তাদের কথোপকথনের তথ্যও মিলেছে। সে সব কথাবার্তা নরেন্দ্রনাথ ও স্বপনের কি না, তা জানতে ‘ভয়েস রেকর্ড’ করে এবং তা পরীক্ষা করে চিহ্নিতকরণের চেষ্টা করছে পুলিশ। মঙ্গলবার নরেন্দ্রনাথের আইনজীবী রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ষড়যন্ত্র করে আসামি করা হয়েছে আমার মক্কেলকে। কী কারণ আমি জানি না। সেটা পুলিশ তদন্ত করে দেখুক। সবে তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনই সব বলব না।’’ অন্য দিকে, সরকারি আইনজীবী দেবজ্যোতি পাল বলেন, ‘‘ধৃত দু’জনকে আর রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়নি। আর এই ঘটনার ‘মেন শুটার’কে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে তিনি আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবসা করতেন। তাঁকে বুধবার হাজির করানো হবে আদালতে।’’
ইংরেজবাজারের তৃণমূল কাউন্সিলর দুলাল খুনে বার বার ‘বড় মাথা’ থাকার দাবি উঠে এসেছে। মৃতের পরিবার ছাড়াও তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশও সেই কথা বলেছেন। ধৃত নরেন্দ্রনাথেরও দাবি তাই। কিন্তু সেই ‘বড় মাথা’ কে বা কারা? বিষয়টি জানতে পুলিশ নরেন্দ্রনাথ ও স্বপনকে দফায় দফা জেরা করেছে। দুলাল খুনে এ পর্যন্ত গ্রেফতারির সংখ্যা সাত। তবে অভিযুক্ত রোহন রজক, বাবলু যাদব এবং আশরফ খান এখনও অধরা। ভিন্রাজ্যেও অভিযুক্তদের খোঁজে লাগাতার তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।