হামলার পরে রাস্তায় মুখ থুবড়ে পড়ে আছেন তৃণমূল কর্মী। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল কাউন্সিলর দুলাল সরকার খুনের দু’সপ্তাহের মধ্যে আবারও গুলি চলার অভিযোগ উঠল মালদহে। ইংরেজবাজারের পর কালিয়াচক। এ বার খুন হলেন এক তৃণমূলকর্মী। তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ার পর ইট দিয়ে মাথা থেঁতলে দেন কয়েক জন। মুখ থুবড়ে পড়ে ছিল তৃণমূল কর্মী হাসান শেখের দেহ। নিথর শরীরের পাশে পড়ে থাকতে দেখা যায় গুলির খোল। তবে তাঁর শরীরে গুলির কোনও চিহ্ন মেলেনি বলে জানাল পুলিশ। বস্তুত, আহতদের শরীরেও গুলির ক্ষত মেলেনি বলে জানিয়েছে তারা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মালদহ গুলিকাণ্ড নিয়ে জেলা পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছেন, কালিয়াচক-১ ব্লকের নওদা যদুপুর এলাকায় নিহত এবং আহতদের শরীরে গুলির ক্ষত মেলেনি। পাশাপাশি তিনি এ-ও জানান, ওই ঘটনায় মোট ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। ছ’জনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ। তদন্ত চলছে।
কালিয়াচকের নয়াবস্তি এলাকায় নিকাশি এবং রাস্তা উদ্বোধনের অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন কালিয়াচক-১ ব্লকের নওদা যদুপুর এলাকার তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি বকুল শেখ। অভিযোগ, তাঁদের দিকে আচমকা ধেয়ে যায় গুলি। রাস্তায় পড়ে যান বকুল। জখম হন আরও কয়েক জন। সেখানকার একটি ভাইরাল হওয়া ভিডিয়ো (যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)-য় দেখা যায় প্রথমে গুলি চালানো হয় বকুলদের দিকে। তার পর ইট দিয়ে এক জনের মাথা থেঁতলে দেওয়া হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে বকুল এবং এসারুদ্দিন শেখ নামে এক তৃণমূল কর্মীকে গুরুতর আহত অবস্থায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়। তাঁদের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। তবে হাসান নামে এক জন মারা যান। তিনি তৃণমূলের সক্রিয় সদস্য বলে খবর।
কী নিয়ে গন্ডগোল, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। তবে দুলাল-কাণ্ডের মতো কালিয়াচকে গন্ডগোলের নেপথ্যেও ‘এলাকার দখল’ নিয়ে বিবাদ রয়েছে বলে তৃণমূলেরই একটি সূত্রের খবর। এই ঘটনা নিয়ে সুজাপুরের বিধায়ক আব্দুল গনি পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। এর আগে দুলালের খুনের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গনি বলেন, “ওখানে একটা গোষ্ঠী রয়েছে। ওখানে পঞ্চায়েত সমিতির নেতা মারা গিয়েছেন। ব্লক প্রেসিডেন্ট সারিউল শেখ মাস্টারি করেছেন। সারিউল তৃণমূল। ওই এ সব করাচ্ছে। একই সঙ্গে বকুল অঞ্চলের নেতা। জাকিরের সঙ্গে ওঁর সমস্যা ছিল। আসল মাথা সেরিউল শেখই।”