North Dinajpur

স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হয় না চিকিৎসা, নেই কলেজও

কিন্তু সূত্রের খবর, এ সব নিয়ে প্রচার করেও গোয়ালপোখর পঞ্চায়েত সমিতি এলাকায় সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করতে হিমসিম খাচ্ছেন শাসক দলের নেতারা।

Advertisement

মেহেদি হেদায়েতুল্লা

গোয়ালপোখর শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:২৮
Share:

সেতু হয়নি, বাঁশের সাঁকো ভরসা। পাঞ্জিপাড়ার সুধা নদীতে। নিজস্ব চিত্র

দীর্ঘদিনের দাবি ছিল উত্তর দিনাজপুরের পাঞ্জিপাড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। স্বাস্থ্যকেন্দ্র হয়েছে। গোয়ালপোখরের থেকে চাকুলিয়া ঘুরপথে না গিয়ে সহজে চাকুলিয়া যাওয়ার জন্য বোচাবাড়ি এলাকার পিতানু নদীর উপরে সেতু হয়েছে।

Advertisement

লোধন ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে গ্রামীণ হাসপাতালে পরিণত করা হয়েছে। মডেল স্কুল ও মাদ্রাসা হয়েছে।

মণিভিটা থেকে পাঞ্জিপাড়া যাওয়ার সড়ক হয়েছে। প্রচুর উঁচু বাতিস্তম্ভ বসেছে। পানীয় জলের ব্যবস্থা হয়েছে।

Advertisement

কিন্তু সূত্রের খবর, এ সব নিয়ে প্রচার করেও গোয়ালপোখর পঞ্চায়েত সমিতি এলাকায় সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করতে হিমসিম খাচ্ছেন শাসক দলের নেতারা। পরিষেবা নিয়ে প্রশ্নে যে তাঁরা জেরবার হচ্ছেন, সে কথা মেনেও নিচ্ছেন তৃণমূল নেতারা। ফলে, পঞ্চায়েত ভোটের আগে, তা নিয়ে তাঁদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ বাড়ছে। পাঁচ বছর আগে, শাসক দলের নেতারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, গোয়ালপোখরে কলেজ হবে। কিন্তু কলেজ হয়নি। কথা ছিল, পাঞ্জিপাড়ায় চর্মনগরী হবে। সে দাবিও পুরণ হয়নি। পানীয় জলের রিজ়ার্ভার বসানো হয়েছে, কিন্তু জল মেলে না।

স্থানীয় তৃণমূল নেতা আখতার আলম বলেন, “সর্বত্র গলা ফাটিয়ে বলছি, তৃণমূল ভাল কাজ করেছে। আকৃষ্ট করার মতো কাজগুলো বেছে বেছে বলছি। কিন্তু সে সব কানে না তুলে মানুষ নিজেদের চোখে দেখা নানা অনিয়মের প্রশ্ন তুলে কৈফিয়ত চাইছেন।’’

এক সময় ফরওয়ার্ড ব্লকের সিংহের গর্জন থেকে কংগ্রেসের হাতের দখলে গিয়েছিল গোয়ালপোখর। সৌজন্যে, প্রয়াত কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। রাজ্যে পালাবদলের পরে, সে শিবিরের বড় একটি গোষ্ঠী তৃণমূল শিবিরে যোগ দেয়। কংগ্রেসের শক্তিক্ষয় হয়। কিন্তু বর্তমানে আবার নতুন করে কংগ্রেস শক্তিবৃদ্ধি করছে বলে স্থানীয়দের দাবি।

গোয়ালপোখরের সাধারণ মানুষ অবশ্য শুধু দুর্নীতি, স্বজনপোষণ বা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়েই বিরক্ত নন, উন্নয়ন নিয়েও অনেক প্রশ্ন তুলেছেন। পাঞ্জিপাড়ার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক তাজেমুল হক বলেন, “কিসান মান্ডি, কর্মতীর্থ, টেকনিক্যাল কলেজ ইত্যাদি হয়েছে। কিন্তু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিষেবা নেই। কিসান মান্ডিতে ধান কেনা ছাড়া, কিছু হয় না। কর্মতীর্থ প্রায় অচল, স্থানীয় জরুরি প্রয়োজনের উন্নয়ন কই? সীমান্তের গ্রাম নাগর নদীর বন্যায় জলমগ্ন হয়। গোয়ালপোখরে একটি কলেজের দাবি দীর্ঘদিনের। তা-ও হয়নি।’’

মোট ১৩টি পঞ্চায়েত নিয়ে গোয়ালপোখর ব্লক এলাকা। এখানে ধান, আলু ছাড়াও, প্রচুর আনাজ চাষ হয়। সাহাপুরের গ্রামের চাষি তৌফিক শেখ, রমেন দাস নন্দঝাড় গ্রামের রতন দাস সহ প্রমুখের অভিযোগ, এখানে বহুমুখী হিমঘরের ব্যবস্থা করার জন্য নিয়ে শাসক দলের নেতা-বিধায়ককে বহু বার বলা হয়েছে। কিছু হয়নি।

গোয়ালপোখর রাজ্যের মন্ত্রী গোলাম রব্বানির এলাকা। রব্বানির দাবি, “গোয়ালপোখরে কাজ হয়েছে ৮৫-৯০ শতাংশ। কিছু কাজ বকেয়া ছিল, তা সম্পূর্ণ করতে তৎপরতা শুরু হয়েছে। কলেজ গড়ার বিষয়ে জমির খোঁজ চলছে।’’

তবে কংগ্রেস নেতা মহম্মদ নাসিম আহসানের অভিযোগ, “যে কাজ হয়েছে সেগুলোর পরিষেবা মিলছে না। বেশির ভাগ রাস্তা এখনও কাঁচা। জলাধার বসানো হয়েছে। জল মেলে না। মডেল স্কুল হয়েছে, কিন্তু তা বন্ধ। আসলে কাজের নামে নেতাদের পকেটে কাটমানি গিয়েছে সে কাজটা হয়েছে।’’ অভিযোগ মানেননি তৃণমূলেরস্থানীয় নেতৃত্ব।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement