গরমে ফুটিফাটা মাঠ। বৃষ্টির পূর্বাভাসেও চিন্তা কাটছে না কৃযকের। কোচবিহারে। নিজস্ব চিত্র
দিন কয়েকের গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। মাঠে-ডোবায় জলও শুকিয়ে গিয়েছে। চাষের কাজ করতে গিয়ে অতিরিক্ত খরচের মুখে পড়েছেন কৃষকেরা। তারই মধ্যে বৃহস্পতিবার পারদ কিছুটা নামল কোচবিহারে। সে সঙ্গেই বৃষ্টির পূর্বাভাসও দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। সব মিলিয়ে গুমোট কিছুটা কেটেছে। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন কৃষকেরাও। যদিও বিক্ষিপ্ত এবং কম মাত্রায় বৃষ্টি সেচের কাজে বিশেষ সহায়ক হবে না বলে মনে করছেন কৃষকদের একাংশ।
উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রামীণ মৌসম সেবা কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, আজ, অর্থাৎ, ২১ এপ্রিল থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত আকাশ মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ২২ ও ২৩ এপ্রিল কোচবিহারে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রামীণ মৌসম সেবা কেন্দ্রের নোডাল অফিসার শুভেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দিন কয়েক হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তাতে তাপমাত্রা কিছুটা কমে আসবে। গরম কমবে। কৃষকদেরও কিছুটা উপকার হবে।’’ তবে যা বৃষ্টি হবে তা সেচের জন্য পর্যাপ্ত নয়। সে জন্য কৃষকদের আলাদা ভাবে সেচের ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কৃষক মোশারফ হোসেন বলেন, ‘‘এই সময়ে বৃষ্টির খুব প্রয়োজন। ধান-পাটের ফলন বাড়াতে হলে বৃষ্টি ছাড়া, কোনও বিকল্প নেই। তাই বৃষ্টি আসবে শুনে কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছি। তবে আরও বৃষ্টি প্রয়োজন এখন।’’
উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রামীণ মৌসম সেবা কেন্দ্র জানিয়েছে, আলিপুরদুয়ার জেলায় আজ, শুক্রবার থেকে তিন দিন বিক্ষিপ্ত ভাবে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে উত্তর দিনাজপুরেও। আবহাওয়া অফিস অবশ্য জানিয়েছে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টিপাত হবে। প্রয়োজনের তুলনায় যা অনেকটাই কম।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কোচবিহার তথা গোটা উত্তরবঙ্গে এক টানা গরম চলছে। তাপমাত্রা দিনের পর দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। সাধারণ মানুষ অসুবিধার মুখে পড়েছে, সমস্যায় পড়েছেন কৃষকেরাও। কোচবিহার মূলত কৃষি প্রধান এলাকা। এই সময়ে বোরো ধান ও পাট চাষ হচ্ছে। ভুট্টাতেও ফলন এসেছে। অতিরিক্ত গরম সব ফসলের জন্যেই ক্ষতিকর। বিশেষ করে পাট ও বোরো চাষে প্রচুর জলেরও প্রয়োজন হয়। বিকল্প সেচের ব্যবস্থা করতে গিয়ে তাই খরচ বেড়ে গিয়েছে অনেকটা। কৃষকদের অনেকেই জানান, কেউ ডিজ়েল চালিত পাম্পসেট ব্যবহার করেন। অনেকে আবার বিদ্যুৎচালিত পাম্পসেটের উপরে নির্ভরশীল। ফলে, দু’ক্ষেত্রেও জল দিতে অনেক টাকা গুনতে হয়। কোচবিহারের একটি ফার্মার্স ক্লাবের সম্পাদক অমল রায় বলেন, ‘‘বৃষ্টির কথা শুনে ভাল লাগছে। তবে এই সামান্য বৃষ্টিতে অবশ্য সেচের তেমন কোনও উন্নতি হবে না। সেচের জন্য কৃষকদের আলাদা ভাবে জলের ব্যবস্থা করতেই হবে।’’