কোচবিহার রাজবাড়ির প্রবেশপথ
কোচবিহার রাজবাড়ি দেখতে প্রতি দিন বহু মানুষ আসেন। কিন্তু তাঁদের অনেককেই ইদানীং বাইরে থেকে রাজবাড়ি দেখতে হয়। ভিতরে ঢুকতে পারেন না তাঁরা। কারণ, ভিতরে ঢুকতে গেলে এখন অনলাইনে টিকিট কাটতে হয়। বহু মানুষ এখনও অনলাইন কেনাকাটায় অতটা সড়গড় হয়ে ওঠেননি। ফলে বাইরে থেকেই তাঁদের রাজবাড়ি দর্শন করে চলে যেতে হয়। ফলে পর্যটকদের ক্ষোভ দিন দিন বেড়েই চলেছে। যদিও রাজবাড়ির দায়িত্বে থাকা আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া-র বক্তব্য, করোনা-কালে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতেই ওই ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।
শিলিগুড়ি থেকে কোচবিহার ঘুরতে এসেছেন সুবিনয় সেন চৌধুরী। রাজবাড়ির সামনে গিয়েও সপরিবার তাঁর আর ভিতরে ঢোকা হয়নি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া বললেই তো আর সঙ্গে সঙ্গে হওয়া যায় না। উত্তরবঙ্গে এখনও কৃষিজীবী মানুষের বাস। অনেকের মোবাইল পর্যন্ত নেই। সেখানে এই ধরনের ব্যবস্থা সত্যিই বেদনাদায়ক।’’
অন্য পর্যটক কৌশিক দাস বলেন, ‘‘অনলাইন লেনদেনের সুবিধা রয়েছে ঠিকই, কিন্তু এখনও তা সাধারণ মানুষের হাতের নাগালের বাইরে। অনলাইন লেনদেনের পাশাপাশি বিকল্প ব্যবস্থা অবশ্যই রাখা উচিত ছিল আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার। এর ফলে পর্যটকদের যথেষ্ট হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। বেশিরভাগ মানুষ ফিরে যাচ্ছেন রাজবাড়ি না-দেখেই। এতে তো পর্যটন শিল্পের ক্ষতি হচ্ছে।’’
রাজবাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা এক কর্মী জানাচ্ছেন, আগে টিকিট বিক্রি ভালই হত। দিনে প্রায় ২ হাজার লোক রাজবাড়ি দর্শন করতে আসতেন। কিন্তু সেই সংখ্যাটা এখন নেমেছে পাঁচশোয়। গত ২৩ ডিসেম্বর রাজবাড়িতে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় পর্যটনমন্ত্রী প্রহ্লাদ সিংহ পটেল। তিনি আশ্বস্ত করেছিলেন, অনলাইন টিকিটের পাশাপাশি ম্যানুয়াল টিকিটের ব্যবস্থাও করা হবে। কিন্তু এখনও তা হয়নি বলেই অভিযোগ।
আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া-র অ্যাসিস্ট্যান্ট আর্কিওলজিস্ট চুনচুন কুমার বলেন, ‘‘করোনার কারণেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। গত জুলাই মাসে রাজবাড়িতে পর্যটকদের ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয় এবং তখন থেকেই অনলাইন টিকিট সিস্টেম এর ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: আজ উত্তরবঙ্গে কোভিড টিকা
আরও পড়ুন: দুর্ঘটনা এড়াতে চালকদের চা খাওয়ালো পুলিশ