ইংরেজবাজার পুরসভা —নিজস্ব চিত্র।
ইংরেজবাজার। শহরের পূর্ব পাশ দিয়ে বয়ে চলা মহানন্দা নদীর পাড়ে ১৮৬৮ সালে ইংরেজবাজার পুরসভা গঠিত হয়। এর পর ধীরে ধীরে এই পুরসভা স্বাবলম্বী হয়েছে। ২৯টি ওয়ার্ড রয়েছে এই পুরসভায়। মধ্য দিয়ে চলে যাওয়া ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক গুরুত্ব বাড়িয়েছে এই শহরের। উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার ইংরেজবাজার। আধুনিকতা ছোঁয়া গায়ে লাগলেও পুরবাসীদের আক্ষেপ রয়েছে অনেক।
আজও এই পুরসভার রাস্তা চওড়া নয়। রাস্তার দু’ধারের ফুটপাথ পথচারীরা ব্যবহার করতে পারেন না। ব্যবসায়ীদের জবরদখল রয়েছে ফুটপাথ। অনেকেই আবার এই পুরসভাকে ‘টোটোর পুরসভা’ বলে। নরক যন্ত্রণা উপভোগ করতে হয় শহরবাসীকে। নিয়ন্ত্রণ নেই এই দুষণমুক্ত পরিবহণ টোটোর।
এই পুরসভায় কোনও ডাম্পিং গ্রাউন্ড নেই। ফলে সর্বত্র আবর্জনার স্তূপ। শহরের পূর্ব দিক দিয়ে বয়ে চলা মহানন্দা নদী হারিয়েছে তার শ্রী। কেন না শহরের নিকাশির একমাত্র মাধ্যম এই নদী। পুরসভার ড্রেনেজ সিস্টেম এই নদীর সঙ্গে যুক্ত। তাই শহরের পরিবেশ যেমন দূষিত হচ্ছে তেমনই মৃত্যু হচ্ছে প্রাণচঞ্চল একটি নদীর। শুধু তাই নয় শহরের অলিগলিতে গড়ে উঠেছে বিশালাকার ফ্ল্যাটবাড়ি।
অবৈজ্ঞানিক ভাবে ভূগর্ভস্থ জল তুলে নেওয়া হচ্ছে। যে কারণে ভূগর্ভস্থ জলের সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। জল দূষিত হচ্ছে। আর্সেনিক মুক্ত বিশুদ্ধ পানীয় জলের প্রকল্প এক দশক আগে শুরু হয়েছিল। কিন্তু আজও কার্যকর হয়নি।
রবীন্দ্রভবন রয়েছে। বেশ কয়েক বার সংস্কারও হয়েছে। কিন্তু তার কার্যকারিতা বন্ধ। শহরের প্রাণকেন্দ্র বৃন্দবানী মাঠের সামনে কয়েক দশক আগে তৈরি করা হয়েছিল মুক্তমঞ্চ। যেখানে রাজনৈতিক সভা থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হত। সেটাকেই বেসরকারি সংস্থাকে শরীরচর্চার কেন্দ্র করার জন্য দিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুরসভার এমন বহু সম্পত্তিকে বেসরকারি হাতে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। শহরের আকাশ আজ মুক্ত নেই। উঁচু বিশালাকার ব্লিডিং যেমন রয়েছে, তেমন শহর জুড়ে বিজ্ঞাপনের বড় বড় বোর্ড। আমের এই শহর আজ কংক্রিটের আস্তানা হয়ে দাঁড়িয়েছে।