কোথাও জমিতে জল, কোথাও আঁতুড় নর্দমাই

 শনিবার ২ নম্বর ওয়ার্ডের ধূপকোম্পানি রোড, বাঘাযতীন কলোনি রোড, নিবেদিতা রোড ঘুরে জল জমে থাকতে দেখা গিয়েছে।

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৪৭
Share:

বেহাল: যেখানে সেখানে নিকাশি নালায় এ ভাবেই জমে রয়েছে জল। পুরসভার নজরদারি নেই বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। শিলিগুড়ি পুর এলাকায়। ছবি: স্বরূপ সরকার

কোথাও পাঁচিল ঘেরা পরিত্যক্ত জমিতে জল জমে। কোথাও নিকাশিতে জল দাঁড়িয়ে। শিলিগুড়ি পুরসভার ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ছবিটা এমনই। এই দুই ওয়ার্ডে ডেঙ্গির প্রকোপ বিপজ্জনক বলে অভিযোগ। এখন ডেঙ্গি পরিস্থিতি মোকাবিলায় ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে টাস্ক ফোর্স গঠন করে নজরদারি, বিশেষ দলের বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা চলছে। তারপরেও ওয়ার্ডের এই পরিস্থিতি কেন উঠেছে সেই প্রশ্ন।

Advertisement

শনিবার ২ নম্বর ওয়ার্ডের ধূপকোম্পানি রোড, বাঘাযতীন কলোনি রোড, নিবেদিতা রোড ঘুরে জল জমে থাকতে দেখা গিয়েছে। ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সীমানায় দেশপ্রিয় সরণির বিভিন্ন এলাকাতেও একই ছবি। সরকারি হিসেবে ওই দুই ওয়ার্ডের প্রতিটিতে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা অন্তত ৪৫ জন করে। ২১ নম্বর ওয়ার্ডে আক্রান্ত অন্তত ৪০ জন। সেখানকার কাউন্সিলরের দাবি, ২১ নম্বর ওয়ার্ডে আক্রান্তের সংখ্যা ৭০ জনের মতো। স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে আক্রান্তের সংখ্যা অন্তত ২১ জন। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে ১৩ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডেও। পুর এলাকার অন্য ওয়ার্ডগুলিতেও কমবেশি ডেঙ্গি আক্রান্ত রয়েছে বলে জানা গিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ১৩ জনেরও বেশি আক্রান্তের খবর মিলেছে। ২৮ ও ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে সেপ্টেম্বর মাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। ১, ৪, ৮-১২, ১৯, ২২, ৩৭-৪১, ৪৩, ৪৫-৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে আক্রান্ত ১০-১২ এর মধ্যে। সরকারি হিসাবে পুর এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা শনিবার পর্যন্ত ৫১৮ জন। বেসরকারি হিসাবে সংখ্যাটা হাজারেরও বেশি।

স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘ওয়ার্ডগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে। স্প্রে, ধোঁয়া ছড়াতে জোর দিতে বলা হয়েছে।’’

Advertisement

২ নম্বর ওয়ার্ড ১ নম্বর বরো চেয়ারম্যান স্নিগ্ধা হাজরার এলাকা, ৩ নম্বর ওয়ার্ড ডেপুটি মেয়র রামভজন মাহাতোর। ওই ওয়ার্ডে সাফাই নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। স্নিগ্ধা বলেন, ‘‘বিভিন্ন পরিত্যক্ত জমিতে জল জমে থাকার বিষয়টি ঠিক। পুরসভার তরফে জরিমানা করা দরকার।’’ আর ডেপুটি মেয়রের দাবি, ‘‘অনেকে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে এখন অধিকাংশই ভাল রয়েছে।’’ ধূপকোম্পানি রোডের বাসিন্দা আশিস সাহা সম্প্রতি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ওই এলাকার বাসিন্দা এক মহিলারও ডেঙ্গি হয়। দেশপ্রিয় সরণির সুনীল সরকারের বাড়ির চারজন আক্রান্ত ছিলেন। সুনীলে ছেলে হ্যাপি বলেন, ‘‘পুরসভার লোক এসে দেখেছেন বাড়ির ভিতরে পরিষ্কার। বাইরে জল জমে থাকে।’’

পুজোর মধ্যে ২১ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন। পরিবারের দাবি, তিনি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ছিলেন। মেডিক্যাল কলেজে ডেঙ্গি নিয়ে এ বছর ভর্তি হয়েছেন ১১৫ জন। এখন ৫ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত ভর্তি রয়েছেন। শিলিগুড়ির হাকিমপাড়া, মাটিগাড়া, খালপাড়ার নার্সিংহোমগুলোতে ডেঙ্গি নিয়ে অনেকেই ভর্তি রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement